সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নওগাঁ পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে হাট কমিটির ২২ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
র্যাব-১২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটে অভিযান চালায়। রাতে মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
র্যাব জানায়, আটককৃতরা হাট ইজারা নিয়ে সরকারি নিয়ম আমান্য করে ক্রেতাবিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে খাজনা আদায় করছিলেন।
বেআইনি খাজনা আদায়ের অভিযোগে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাছে আগেই অভিযোগ করেছিলেন।
গত সপ্তাহে এ হাটের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রচার করে নিউজবাংলা। এরপর থেকে হাট কমিটির কার্যক্রমে কঠোর নজরদারি শুরু করে প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা সলিমুল্লাহ সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইজারাদার চলতি বছরের শুরু থেকে এ হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করে আসছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তারা একটি গরুর জন্য ক্রেতার কাছ থেকে এক হাজার, বিক্রেতার কাছ থেকে পাঁচ শ ও গরু খুঁটিতে বাঁধতে তিন শ, অর্থাৎ মোট এক হাজার আট শ টাকা করে করে আদায় করছিল। এ অভিযোগে র্যাব হাটে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়।’
সিরাজগঞ্জের পশুর হাটগুলোর মাঝে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট অত্যতম। এবার ভ্যাটসহ ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকায় আকবর আলী নামের এক ব্যক্তি এ হাট এক বছরের জন্য টোল আদায়ের ইজারা নেন।
তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তিনি হাট ইজারা নিয়েই শুরু করেছেন অতিরিক্ত টোল আদায়। এমনকি হাট প্রাঙ্গণের বাইরে নিজস্ব ঘরে যারা ব্যবসা করেন তাদের কাছে থেকেও তিনি টোল দাবি করছেন। ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করেছেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, পাবনার ভাংগুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী করতোয়া নদীর তীরে নওগাঁ হাট অবস্থিত। সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগব্যবস্থার কারণে পাঁচ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতি বৃহস্পতিবার নওগাঁ হাটে কেনাবেচার জন্য আসেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৪ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ইজাদারকে কোন আইন বলে হাট পেরিফেরির বাইরে টোল দাবি করছেন- এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ।
এ নিয়ে নিউজবাংলায় ‘হাট বন্ধ কে বলেছে, তাড়াশ চলে আমাদের হুকুমে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের।
র্যাব-১২ এর স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার জন রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কিছু মিডিয়াতে এ হাটের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারের পর থেকেই আমরা হাটের প্রতি নজর রাখি। এরই ধাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আমরা অভিযান চালাই। অভিযানে হাট কমিটির ২২ সদস্যকে আটক করা হয়। সবার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে রাতে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
তিনি জানান, সরকারি বিধিমালার বাহিরে কোনভাবেই অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা যাবে না বলে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।