বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিন গাজীপুরের সড়ক ও মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সড়ক-মহাসড়কে দেখা যায় গাড়ির চাপ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সেই চাপ বাড়তে থাকে, সঙ্গে যানজটও।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে গত ১ জুলাই সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যায়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৪ দিন শেষে বৃহস্পতিবার থেকে আট দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও কঠোর বিধিনিষেধ চলবে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
বেলা বাড়তে থাকলে পুরো সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে অন্তত এক ঘণ্টা।
এ ছাড়া তীব্র গরমে বাসের ভেতর কাহিল হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির জন্য আনা পশুবাহী ট্রাক।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা ও ঢাকা-সিলেট সড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে মিরের বাজার পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। মূল সড়ক পেরিয়ে যানজট আশপাশের শাখা সড়কগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকেই টঙ্গীর স্টেশন রোড, টঙ্গী আশুলিয়া সংযোগ সড়ক, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, বোর্ড বাজার, ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এদিন সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। এ ছাড়া মহাসড়কে অবাধে অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচলের কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
ট্রাকচালক আবুল কাশেম জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী বাজার পর্যন্ত সড়কের বেশির ভাগ জায়গা ভাঙা। এ সড়কে অনেকটা ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করায় দিনভর যানজট লেগে থাকে।
কোভিড-১৯ টিকা দিতে বোর্ড বাজার থেকে টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আসেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাহী। সকাল ৯টায় বোর্ড বাজার থেকে রওনা হয়ে সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।
তিনি বলেন, সড়কে তীব্র যানজটের কারণে ২০ মিনিটের রাস্তা দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে।
শাহনাজ পারভিন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘চৌরাস্তা থেকে সকাল ১০টায় ঢাকার মহাখালীর উদ্দেশে রওনা হয়েছি। টঙ্গী পর্যন্ত আসতেই দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। মহাখালী পৌঁছাতে আর কত সময় লাগবে সেই দুশ্চিন্তায় আছি।
টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘সড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। এ ছাড়া সড়কে খানাখন্দ সংস্কার কাজ চলছে। এর ফলে যানবাহন ধীরগতিতে চলায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে সড়কে গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় বেশির ভাগ বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। অধিকাংশ যাত্রীকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিধিনিষেধ তুলে দেয়ায় সড়কে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানচলাচল বেড়েছে। এর ফলে ঢাকামুখী এবং ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের রুটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি থানা পুলিশও সড়কে কাজ করছে।