রপ্তানি পণ্যবাহী জাহাজকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং দেয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বুধবার একসঙ্গে কলম্বোগামী তিনটি কনটেইনার জাহাজ ভিড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে। এতে দেশের বিভিন্ন অফডকে জমে থাকা রপ্তানি পণ্য দ্রুত পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিবহন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দুপুরে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী কলম্বোগামী দুটি কনটেইনার শিপ চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়ে। এর মধ্যে মানাতি জাহাজটি বুধবার দুপুরে বন্দরের এনসিটি ৫ নম্বর জেটিতে ভিড়ে। ত্রিশ মিনিটের ব্যবধানে
বন্দরের জিসিবি ১৩ নম্বর জেটিতে ভিড়ে একই দেশের পতাকাবাহী জাহাজ সান আলফানসো। এরপর বিকেলের দিকে জিসিবি ৬ নম্বর জেটিতে ভিড়ে কলম্বোগামী পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ওইএল কলম্বো।
রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার বোঝাই শেষে মানাতি ও সান আলফানসো শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। আর ওইএল কলম্বো জাহাজটি বন্দর ছাড়বে শনিবার।
বন্দরের পরিবহন বিভাগের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ঈদুল আজহার আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানি পণ্য নিয়ে কলম্বো পোর্টে যাবে ৭টি জাহাজ। যার মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার টিইইউস রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার পাঠানো সম্ভব হবে।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত দেশের ১৮টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে ১৫ হাজার ৩১৪ টিইইউস রপ্তানি কনটেইনার আছে। এসবের বেশির ভাগই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট কলম্বো হয়ে মাদার ভেসেলযোগে ইউরোপ-আমেরিকায় যাবে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হিসেবে সিঙ্গাপুর, কলম্বো, পোর্ট কেলাং ও তানজুম পেলিপাস ব্যবহার করে। সেখান থেকে মাদার ভেসেলে করে রপ্তানি কনটেইনার যায় ইউরোপ-আমেরিকায়।
কিন্তু সম্প্রতি কোভিডের কারণে মাদার ভেসেলের শিডিউলে বিপর্যয় দেখা দেয়। ফলে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট সিঙ্গাপুর ও কলম্বোতে প্রচুর রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার জমে যায়।
এর মধ্যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিদেশি লাইন অপারেটরগুলো বাংলাদেশ থেকে নতুন করে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার বুকিং নেয়া স্থগিত করে। এ ছাড়া অন্য লাইন অপরেটরগুলোও কনটেইনার বুকিং চার্জ বাড়িয়ে দেয়।
আবার সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরে মাদার ভেসেলেও সংকট দেখা দেয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে দেশের রপ্তানি খাতে। দেশের ১৮টি বেসরকারি অফডকে স্তূপ হতে থাকে রপ্তানি পণ্য।
বিভিন্ন মহল ও রপ্তানিকারদের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয়। সবশেষ গত সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে কিছু সিদ্ধান্ত জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। যার সুফল অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মিলবে বলে প্রত্যাশা বন্দর কর্তৃপক্ষের।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং দেয়ার বিষয়ে বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমস্যা উপলব্ধি করে বন্দর উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি, শিপিং লাইনগুলো যেন দ্রুত রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার মাদার ভেসেলে তুলে দিতে পারে সে লক্ষ্যে ফিডার ভেসেল বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বন্দর।