করোনার কারণে একাধারে ১৪ দিনের সরকার-ঘোষিত লকডাউন শেষে বৃহস্পতিবার থেকে লঞ্চ ও গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের ভিড় স্বাভাবিক আছে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস, লেগুনা, সিএনজি-ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ সব ধরনের গনপরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
ফেরিঘাটগুলোতে ছোট-বড় যানবাহনের কিছুটা চাপ থাকলেও লঞ্চ চলাচল শুরু করায় ফেরিঘাটে যাত্রীদের তেমন কোনো ভিড় নেই।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম জানান, নৌরুটে ১০টি ফেরি চলছে। ঘাটে পদ্মা নদী পারাপারের অপেক্ষায় প্রায় ৩০০ ছোট-বড় যানবাহন রয়েছে। তবে, ফেরিঘাটে যাত্রীদের কোনো ভিড় নেই।
এদিকে, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। লঞ্চে উভয়মুখী যাত্রীদের স্বাভাবিক চলাচল রয়েছে।
শিমুলিয়া ঘাটে পদ্মা নদী পারাপারের অপেক্ষায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০০ যানবাহন রয়েছে। ছবি: নিউজবাংলাবিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী পরিচালক সাহাদাত হোসেন জানান, এ রুটে মোট ৮৭টি লঞ্চের মধ্যে ৭৮টি লঞ্চ চলাচল করছে। বাকি লঞ্চগুলোর কাগজপত্র হালনাগাদ করা নেই বিধায় চালাতে পারছে না। লঞ্চঘাটগুলোতে যাত্রীদের চাপ নেই।
তবে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। নদীতে তীব্র স্রোত ও পশুবাহী ট্রাকের চাপে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ফেরিঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে।
এতে দীর্ঘ সময় নদী পারের অপেক্ষায় থেকে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ ও গরমে পশুবাহী ট্রাকগুলোতে থাকা পশু ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এতে ট্রাকে থাকা পশুগুলোও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী মিলন সরদার নামে এক গরু ব্যবসায়ী জানান, তিনি বুধবার রাত ৯টা থেকে ঘাট এলাকায় এসে বসে আছেন। এখনো ফেরিতে উঠতে পারেননি। এতে গরমে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন ‘আমি ৮টি গরু নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকার ফলে গরুগুলো হিট স্টক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দ্রুত ফেরিতে উঠতে পারলে বাঁচতাম।’
বিআইডব্লিউটিসির উপমহাব্যবস্থাপক ফিরোজ শেখ জানিয়েছেন, এই রুটে ছোট-বড় মিলে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোত রয়েছে। এ ছাড়াও পশুবাহী ট্রাকের চাপের কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় যানবাহনের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে।