সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় দুস্থদের নামে বরাদ্দ সরকারি ত্রাণের ডেউটিন ও টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে উপজলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সেলিম রেজার বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, দুস্থদের নামে ডেউটিন ও টাকা বরাদ্দের মাস্টার রোলে স্বাক্ষর নেয়া হলেও তাদের কাউকে সেটি দেয়া হয়নি।
২০২০-২১ অর্থবছরে কামারখন্দ উপজেলায় দুস্থদের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তর থেকে ৫৫ বান্ডিল ডেউটিন ও ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
উপজেলার চর টেংরাইল গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঝুপড়ি করে কষ্টে বাস করি। রোজগার কম হওয়ায় মাথা গোঁজার ঘরটি বড় করতে পারিনি।’
ত্রাণ ও দূর্যোগ অধিদপ্তর থেকে রফিকুল ইসলামের নামে ৩ বান্ডিল ডেউটিন ও নয় হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
রফিকুল অভিযোগ করেন, টিন ও টাকা গ্রহণের কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তার কাছ থেকে টিন এবং টাকা ফেরত নিয়ে নেন। পরে তাকে মাত্র এক হাজার টাকা দেয়া হয়।
একই গ্রামের বেল্লাল শেখ জানান, তাদের নামে ৩ বান্ডিল ডেউটিন ও নয় হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও সেটি তারা পাননি। একই অভিযোগ গ্রামের আরেক বাসিন্দা বাদল সরকারেরও।
তিনি বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের ডেউটিন ও টাকা আমাকে দেয়া হলেও সেটি পাইনি। গ্রামের স্কুল ও হাট নির্মাণের জন্য ভাইস চেয়ারম্যানের নির্দেশে সব টিন বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেয়া হয়েছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ ভাইস চেয়ারম্যানের হয়ে অন্যদের টিন আত্মসাত করছেন বাদল সরকার।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি ১৩ জনের নামে বরাদ্দের টিন তুলে জমা দিয়েছি। বিষয়টি ইউএনও এবং এমপি জানে।’
স্থানীইদের অভিযোগ, গ্রামে স্কুল স্থাপনের নাম করে দুস্থদের নামে বরাদ্দের ডেউটিন ও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। বাদল সরকারের মাধ্যমে ডেউটিন ও টাকা হাতিয়ে নিয়ে এই গ্রামের দোকানি আব্দুল মান্নানের রাইচমিলের ঘরে সেগুলো লুকিয়ে রাখা হচ্ছে।
সরেজমিনে বুধবার সন্ধ্যায় আব্দুল মান্নানের রাইচমিলে গিয়ে ত্রাণের টিনের স্তুপ দেখা যায়। ত্রাণের টিন কীভাবে এলো জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘টিনগুলো আমার নয়। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা এখানে এনে রেখেছেন।’
দুস্থদের ডেউটিন আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি দুস্থদের ডেউটিন আত্মসাৎ করিনি। এসব অভিযোগ মিথ্যা।’
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ সবুজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা আয়শা সিদ্দিকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে দুস্থদের হাতে ডেউটিন ও টাকা তুলে দেয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে যদি কেউ ঢেউটিন ও টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’