বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তুলশীগঙ্গার পাড় কেটে পুকুর ভরাট; বর্ষায় ক্ষতির শঙ্কা

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২১ ০০:৩১

অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কথা মতো তিনি মাটি নিয়েছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে এভাবে মাটি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নওগাঁ সদর উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে ব্যক্তিগত পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, নদীতে পানি বাড়লে প্লাবিত হবে বিস্তীর্ণ এলাকা।

অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কথা মতো তিনি মাটি নিয়েছেন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ব্যক্তির নিজের প্রয়োজনে এভাবে মাটি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নওগাঁ সদর উপজেলার খিদিরপুর, পিরোজপুর ও সুলতানপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে তুলশীগঙ্গা নদী বয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নদীর ত্রিমোহনীহাট রেগুলেটর থেকে তুলশীগঙ্গা ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের দিকে খনন করা হয়।

খননের সময় মাটি নদীর পাড়ে রাখা হয়েছিল। যাতে বন্যার পানি রাস্তা ও এলকায় ঢুকতে না পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারির অভাবে বেশ কয়েকদিন থেকে যে যার মতো করে মাটিগুলো কেটে নিচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে অনেক মাটি ব্যবসায়ী রাতের আধারে মাটি ইটভাটায় দিচ্ছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি খিদিরপুর মুন্সিপাড়া গ্রামবাসীর সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

৫/৬দিন থেকে দুটি ভেকু মেশিন ও ১০-১২টি ট্রাক্টর দিয়ে চন্ডিপুর বোর্ড ব্রিজের পাশ থেকে নদীর পাড়ের মাটি কেটে পুকুর ভরাট করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মতিন। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি।

পিরোজপুর স্থানীয় বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘নদীর পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে এসে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। যাদের কাজ তারা যদি না দেখে আমরা কি করব। এটা মহা অন্যায়। কৃর্তপক্ষের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। যাদের বিষয়গুলো দেখভালের কথা তারা মনে হয় কিছুই জানে না। বা জেনেও চুপ আছে।‘

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আগামীতে আমাদের জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে এভাবে মাটি কাটার কারণে। রাস্তার তুলনায় বাঁধ নিচু হয়ে গেছে। নদীতে পানি আসলে বাঁধ উপচে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আমরা স্থানীয় কয়েকজন বার বার প্রতিবাদ করলেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। প্রভাবশালী হওয়ায় হয়তো ম্যানেজ করেই এমন অন্যায় কাজ করে যাচ্ছে। যেন দেখার কেউ নাই।’

খিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্থানীয়ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন অগ্রগতি দেখছি না। নদীর পাড়ের মাটি এভাবে কেটে নিয়ে গেলে বন্যায় আমাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠবে। এতে করে আমাদের বড় সমস্যায় পড়তে হবে। তা ছাড়া নদীর পাড় দিয়ে যাতায়াতও করতে হয়। কেনো যে কৃর্তপক্ষ নীরব।’

অভিযুক্ত পুকুর মালিক আব্দুল মতিন রানীনগর উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘নদী খননের সময় আমাদের জায়গার ওপর নদীর মাটি রাখা হয়েছিল। এতে করে আমাদের সম্পত্তি নষ্ট করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আমরা আবাদ করতে পারছি না।

‘গত ৫-৬ দিন থেকে নদীর পাড়ের মাটি সরানোর কাজ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে, যে যার মতো মাটি সরিয়ে নিতে। নদীর পাড়ের মাটিগুলো দিয়ে পাশেই নিজেদের পুকুর ভরাটের কাজ করছি।‘

এ মাটিগুলো নদীর বাঁধ রক্ষার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মাটি ফেলার কারণে আমার কিছু জমি নষ্ট হয়েছিল। বিস্তারিত কথা পারলে আপনারা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেন।‘

এর পর ফোন কেটে দেন তিনি।

মাটি ব্যবসায়ী লিটন হোসেনের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘যারা পুকুর ভরাট করছেন তারা আমার বন্ধু হয়। মাটি কাটা ও পরিবহনের জন্য গাড়িগুলো ঠিক করে দিয়েছি। এতে আমার কোনো ধরনের লাভ নাই বলে ফোন কেটে দেন।‘

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মাছুদ রানা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে নিচু জায়গা, মসজিদ, মন্দির ও সেবামূলক কাজে ভরাট করা যাবে। তবে ব্যক্তিগত কোনো জায়গায় এভাবে কেউ ভরাট করতে পারবেন না। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসের লোক পাঠিয়েছিলাম। সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।‘

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, জনকল্যাণমূলক এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হলে মাটি সরিয়ে নিতে পারবেন। তবে ব্যক্তিগত কাজে নদীর পাড়ের মাটি কেটে ব্যবহার করা যাবে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

এ বিভাগের আরো খবর