বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ফাটল, মেরামতে দায়সারা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ১৯:৫৮

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়ে জিরো টলারেন্স দেখানো হচ্ছে। থুকড়া প্রকল্পে যেটা হয়েছে সেটা ভুল-বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। আমরা অন্য খাত থেকে টাকা দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ ঘরগুলো মেরামত করছি।’

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের পরেই সেগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটলসহ নানা ধরনের ত্রুটি। সেই ত্রুটি সারাতে নতুন করে মেরামত করছে প্রশাসন।

এ ছাড়া প্রকল্প এলাকাগুলোর বেশির ভাগই নিচু ও জলাশয়ের কাছাকাছি হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে ঘর। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১০টি এলাকায় ৬৪০টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ব্যয়ে ১৪০টি ঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কাঁঠালতলায় ৬০টি, সাহস ইউনিয়নে ৪টি ও থুকড়া প্রকল্পে ৭৬টি ঘর রয়েছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা করে ৫০০টি ঘর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

এর মধ্যে কাঁঠালতলায় ৪৫টি, সাজিয়াড়া শেয়ারঘাটা এলাকায় ৫৬টি, ধামালিয়ায় ৩৯টি, শোভনার বাদুড়গাছা ও বাহাদুরপুরে ২৮০টি এবং ভান্ডারপাড়ায় ৮০টি।

থুকড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, সদ্য নির্মিত ঘরগুলোতে কাজ করছেন ১০ শ্রমিক। ঘরের মেঝের পলেস্তারা তুলে ফেলা হচ্ছে।

পলেস্তারা তুলে ফেলার কারণ জানতে চাইলে মিস্ত্রি উজ্জ্বল বলেন, ‘আগের যে ঠিকাদার কাজ করেছেন যেনতেনভাবে। তাই অধিকাংশ ঘরের মেঝের প্লাস্টার ফেটে যাচ্ছে, ফুলে উঠেছে। সেগুলো উঠিয়ে ফের মেরামত করা হচ্ছে।’

এ প্রকল্পের মেরামত কাজ পেয়েছেন আজহারুল নামে এক ঠিকাদার। তিনি জানান, থুকড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর রয়েছে ৭৬টি। এর মধ্যে অন্তত ৩৬টি ঘরের অবস্থা খারাপ। যেগুলোর মেঝে ও দেয়ালের প্লাস্টার তুলে আবার নতুন করে করা হচ্ছে। কাজ শেষ করতে ১০-১২ দিন সময় লাগবে।

নিচু জায়গায় প্রকল্প নেয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমেছে, নেই ঘরে যাওয়ার রাস্তাও। ছবি: নিউজবাংলা

বাহাদুরপুর প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, একদম নদীর পাশে নিচু ধানক্ষেতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকাজ চলছে। প্রকল্পে যাওয়ার রাস্তা নেই। মিস্ত্রিরা নির্মাণাধীন ঘর ভেঙে পড়ায় সেগুলো দ্রুত মেরামতের চেষ্টা করছেন।

উপজেলার আদর্শ প্রকল্প ধরা হয় আটলিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালতলা প্রকল্পকে। নতুন করে মাটি তুলে কাঁঠালতলা নদীর পাশে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নতুন মাটিতে ঘর নির্মাণ করায় ৪টি ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। সেগুলো দ্রুত মেরামত করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন মাটিতে ঘর নির্মাণ করায় চারটি ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। সেগুলো মেরামত করে দেয়া হয়েছে।’

সাজিয়াড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, সাজিয়াড়া খালের ধার লাগোয়া তৈরি হচ্ছে ঘর। কিছু ঘর তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু দুটি ঘরের মাঝখানে রাখা জায়গা একদম সংকীর্ণ। ফলে চলাচলে কষ্টসাধ্য। এ ছাড়া খাল থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে প্রকল্পের ঘর ও আশপাশের জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বেশির ভাগ প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে নিচু জায়গা ও জলাশয়ের পাশে। কিন্তু স্থানগুলো উঁচু করা হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এসব বাড়িতে বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

এ ছাড়া নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হওয়ায় বেশির ভাগই মেরামত করতে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

অনেক ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে, কোথাও ঘরের নড়বড়ে ভিত দেবে হেলে পড়ছে।

উপজেলার বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান, সাজিয়াড়া ও বাহাদুরপুর প্রকল্প বর্ষা মৌসুমে খাল ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে তলিয়ে যাবে। ফলে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বসবাস করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়ে জিরো টলারেন্স দেখানো হচ্ছে। থুকড়া প্রকল্পে যেটা হয়েছে সেটা ভুল-বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। আমরা অন্য খাত থেকে টাকা দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ ঘরগুলো মেরামত করছি।’

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘যেসব ঘরে ত্রুটি ধরা পড়ছে, সেগুলো মেরামত করছি। প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক আগে।

‘যেসব নিচু এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে সেখানে পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর