ঠাকুরগাঁওয়ে নৈশ্য প্রহরীকে অবরুদ্ধ রেখে বিদ্যালয়ে আগুন দিয়ে লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বড়পলাশবাড়ী বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিউজবাংলাকে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন।
বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এই ঘটনা বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্তরা বলছেন, এর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
ঘটনাটিকে ন্যাক্কারজনক দাবি করে দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক নগেন্দ্রনাথ পাল নিউজবাংলাকে জানান, রাতে স্কুলের নৈশ্যপ্রহরীর কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে কে বা কারা দাহ্য পদার্থ দিয়ে টিনসেডের ৪টি শ্রেণি কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে চেয়ার, বেঞ্চ ও আসবাব পুড়ে গেছে। লুটপাট করা হয়েছে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রজেক্টরসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র।
প্রধান শিক্ষক বলেন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় নৈশ্যপ্রহরী কৃষ্ণ চন্দ্রকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগার কারণে দ্রুত ঘরগুলোর টিন ও আসবাব পুড়ে গেছে।’
স্থানীয় আবেদ আলী বলেন, এলাকার আব্দুস সোবহান ও সামশুল হুদার সাথে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ১০ শতক জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে একাধিকবার মীমাংসায় বসা হয়েছিল। বিষয়টির এখনও সমাধান হয়নি।
অভিযুক্ত সামশুল হুদা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্কুলে আগুন দেয়া বা লুট করা, এটার সঙ্গে আমাদের কোনো সংযোগ নাই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের ফাঁসানোর জন্য এসব কথা বলছেন। আমরা ওই জমি স্কুলের নামে দান করেছি। এটাতে আমাদের কোনো দাবি-দাওয়া নাই।‘
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের আগুনের ঘটনা প্রধান শিক্ষক জানিয়েছে। তাকে বিদ্যালয়ের ক্ষয়-ক্ষতি জানিয়ে জিডি করতে বলা হয়েছে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ফাহিম উদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল জানান, বিদ্যালয়ের কক্ষে আগুন দেয়ার ঘটনা ন্যাক্কারজনক।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষককে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। বড়পলাশবাড়ী বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যে কোন সময় বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা আসলে, শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে।