বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বেনাপোল বন্দরে পণ্যের নিরাপত্তায় বসছে ৩৭৫ সিসিটিভি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ জুলাই, ২০২১ ১৬:৫৮

বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বাইপাস সড়ক, পণ্যাগার, ভারতীয় ট্রাক ও চেসিস টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল, ঢাকা-কলকাতা মহাসড়কসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বসছে ৩৭৫টি আধুনিক মানের সিসি ক্যামেরা।

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে শেষ পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দরে পণ্যের নিরাপত্তায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বা সিসিটিভি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।

১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো বন্দর এলাকায় ৩৭৫টি সিসিটিভি বসানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সিসিটিভি যেমন বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, তেমনি পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস পর্যন্ত পুরো কার্যক্রম নজরদারি করবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও সিসিটিভি স্থাপনে তারা খুশি। তবে আগের মতো যেন খুব অল্প সময়েই সেগুলো অকেজো না হয়।

বন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের জুন মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কাজ শুরু হয়। এ সময় বাংলাদেশ পাট মন্ত্রণালয় আমদানি-রপ্তানি কাজ তদারকি করত। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেনাপোল পরিদর্শন করেন। তিনি পাট মন্ত্রণালয়কে আমদানি করা পণ্য রাখার জন্য গুদাম নির্মাণের নির্দেশ দেন।

১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পাট মন্ত্রণালয়ের অবলুপ্ত ওয়্যার হাউজিং করপোরেশন বেনাপোলে ১১টি পাকা গুদাম নির্মাণ করে। ১৯৮৪-৮৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরের দায়িত্ব নেয় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল ও যশোর উন্নয়ন পরিষদ ছাড়াও স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ১৯৯০ সাল থেকে বেনাপোলকে পৃথক স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে।

সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এই দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এই দাবিকে উপেক্ষা করে ১৯৯৭ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশের ১৮টি স্থলবন্দর নিয়ে ‘বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয় মন্ত্রিপরিষদের সভায়।

২০০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ’ গঠন করে। যার প্রধান কার্যালয় ঢাকায় রাখা হয়। সেই থেকে ‘বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ’ বেনাপোল বন্দরের তদারকি করছে।

দেশের স্থলপথে যে বাণিজ্য হয় তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে ভারতের সঙ্গে।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, নিরাপত্তার স্বার্থে বেনাপোল কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেক আগেই সিসি ক্যামেরার আওতায় এলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে স্থলবন্দরটি এতদিন সেই সুবিধা পায়নি।

ফলে বন্দর থেকে পণ্য চুরি, মাদক পাচার, রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড, চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে বন্দরের নিরাপত্তাকর্মী হত্যাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।

এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ থাকলেও কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যে এতদিন সীমাবদ্ধ ছিল সিসিটিভি স্থাপনের কাজ।

বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বাইপাস সড়ক, পণ্যাগার, ভারতীয় ট্রাক ও চেসিস টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল, ঢাকা-কলকাতা মহাসড়কসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বসছে ৩৭৫টি আধুনিক মানের সিসি ক্যামেরা।

প্রথম পর্যায়ে মাটির নিচ দিয়ে কেব্‌ল সংযোগ ও পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তদারকিতে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন ক্যামেরাগুলো স্থাপনে।

পণ্য আমদানিকারক আমিনুল ইসলাম আনু বলেন, ‘আমরা যারা বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আনি, তাদের অনেক ছোট আইটেমের পণ্য বন্দর থেকে বেশি চুরি হয়। বন্দর থেকে আমদানি পণ্য চুরি হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী এ পথে আমদানি বন্ধ করেছেন। বেনাপোল বন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকলে পণ্য চুরি কমবে।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দরে পণ্য চুরি নতুন কিছু নয়। অনেক দিন থেকে একটি চোর সিন্ডিকেট বন্দর থেকে পণ্য চুরি করে আসছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষকে বারবার বললেও কোনো কাজ হয় না। আর এসব চোরকে সহযোগিতা করে বন্দরের শেড ইনচার্জরা। আমদানি পণ্য চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়মে ব্যবসায়ীরা যারা এপথে আমদানি বন্ধ করেছেন সিসি ক্যামেরায় নিরাপত্তা পেলে তারা আবার ফিরে আসবেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘বছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়। আমদানি বাণিজ্য থেকে সরকারের প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আজও অবহেলিত। ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি সিসি ক্যামেরার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এতে বন্দরে পণ্য চুরিসহ নানা অব্যবস্থাপনা রোধ ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। এখন স্থাপনের কাজ চলছে। ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে সিসি ক্যামেরা বসানোর সব কাজ শেষ হবে।

এ বিভাগের আরো খবর