করোনাভাইরাসে টিকা নিতে কুষ্টিয়ার টিকাকেন্দ্রগুলোতে তিন দিন ধরে দেখা গেছে আগ্রহীদের ভিড়। সিভিল সার্জন বলছেন, রেজিস্ট্রেশন করে ফিরতি ম্যাসেজের জন্য অপেক্ষা না করেই তারা সরাসরি টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত হচ্ছেন। এ কারণে ভিড় হচ্ছে, বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি।
জেলায় ছয়টি টিকাদান কেন্দ্রে মঙ্গলবার তৃতীয়দিনেও দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা থাকলেও টিকা নিতে আগ্রহীদের চাপে স্বাস্থ্যবিধিতে নজরদারি হয়নি। সিরিয়াল পেতে ভোর থেকেই টিকা নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন অনেকে।
তিন দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন কুষ্টিয়া কলাকাকলী কেন্দ্রে আসা অনেকেই। তারা বলছেন, সুরক্ষার জন্য টিকা নিতে আসা। কিন্তু ভিড়ে এখান থেকেই করোনা হয়ে যেতে পারে।
তাদের একজন লিপি আক্তার। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তিন দিন ধরে দাড়িয়ে আছি। অনেকেই মেসেজ না পেলেও এসে আগে টিকা নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দাঁড়িয়েই থাকছি।’
টিকার জন্য লাইনে থাকা আব্দুর রহিম নামের একজনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তিনি জানান, রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু কোনো ম্যাসেজ পাননি।
ম্যাসেজ না পেয়ে কেন টিকা নিতে আসছেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘শুনেছি রেজিস্ট্রেশন করলেই টিকা দিচ্ছে। সে জন্য আসলাম। আমার মত আরও অনেকেই টিকা নিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য লাইনে আছি। যদি না দেয় তাহলে ফেরত যাব।
‘যে হারে করোনা বেড়েছে, তাতে টিকা নিতে দেরি করা ঠিক হবে না। এ কারণেই যত আগে নেয়া যায় সে চেষ্টা করছি।’
আরেক টিকা গ্রহীতা সেলিম আহমেদ বলেন, ‘আমার ঈদের আগে নাটোর চলে যেতে হবে। তাই মেসেজ আসার আগেই টিকা নিলাম। স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছিলেন প্রথমবার ম্যাসেজ আসার আগে টিকা নিলে দ্বিতীয় মেসেজ নাও পেতে পারেন। সেই ঝুঁকি নিয়েও টিকা নিলাম।’
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সবগুলো উপজেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে পর্যায়ক্রমে তালিকা ধরে টিকা দেয়া হচ্ছে। এ জন্য আগ্রহীদের মোবাইলের বার্তা দিয়ে তার জন্য নির্ধারিত তারিখ জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু মানুষ তা মানছেন না। মেসেজ না পেলেও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ লাইনে এসে দাঁড়াচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ভিড়ে লোকজনকে সামাল দেয়া স্বাস্থ্যকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। ম্যাসেজ পাওয়ার আগে টিকাকেন্দ্রে না আসতে তিনি সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সিভিল সার্জন জানান, জেলায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। মোট ৪০ হাজার টিকার মজুদ এখন আছে। দ্বিতীয় ডোজ মজুদ রেখেই এবার প্রথম ডোজ দেয়া হবে। সেই হিসাবে এই টিকা ২০ হাজার জনকে দেয়া যাবে।