চলমান লকডাউনে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বোয়ালমারী বাজারে নির্ধারিত সময়ের পরও মাছ বিক্রি করছিলেন আলাউদ্দিন নামে একজন।
লকডাউন বাস্তবায়নে রোববার বিকেলে ওই বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা।
তবে আলাউদ্দিনের অসহায়ত্বের কথা শুনে তাকে জরিমানার বদলে খাদ্যসামগ্রী দেন ইউএনও। এ বিষয়ে তিনি জানান, বোয়ালমারী বাজার পর্যবেক্ষণের সময় আলাউদ্দিনের অসহায়ত্বের কথা শোনার পর তাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সচেতন করা হয়। পাশাপাশি দরিদ্র্যের কারণে তাকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়।
মাছ বিক্রেতা আলাউদ্দিনের বাড়ি উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ গ্রামে ৷ চার মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে কোনো রকমে তার সংসার চলে৷
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই বাজারে নির্ধারিত সময়ের পর দোকান খোলা রাখায় ব্যবসায়ীদের সতর্ক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়। ওই সময় রাস্তার পাশে আলাউদ্দিনকে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
ইউএনও তার কাছে নির্ধারিত সময়ের পর দোকান খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসার অবস্থা খারাপ হওয়ায় কয়েক দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে চলছেন। পেটের দায়ে অসুস্থ শরীর নিয়েও তাই মাছ বিক্রি করছেন।
তার কথা শুনে মানবিক কারণে সাজা না দিয়ে আলাউদ্দিনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা।
খাদ্যসামগ্রী পেয়ে আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ ৷ লকডাউনে মানুষ তেমন বাজারে আসে না, তাই মাছ বিক্রি করতে না পারে সন্ধ্যায় দোকান খোলা রাখি। পরে ইউএনও স্যার আমার দোকানে এসে জরিমানা না করে সাথে সাথে খাবারের ব্যাগ দেন।
‘স্যারকে ধন্যবাদ জানাই, আমার মতো গরিবকে জরিমানা না করে সহযোগিতা করার জন্য। আমি খুবই খুশি। কয়েক দিন পর ছেলেমেয়েকে নিয়ে দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারব।’
ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, লকডাউন বাস্তবায়নে তেঁতুলিয়ায় নিয়মিত মাঠে গিয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে বাইরে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরির প্রবণতা কমেছে৷
আলাউদ্দিনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার অসহায়ত্বের কথা শোনার পর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সচেতন করি এবং খাদ্যসামগ্রী তুলে দিই। পরবর্তী সময়ে তাকে আরও সহযোগিতা করা হবে।
‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত গরিব অসহায়দের খুঁজে খাদ্যসহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে।’