বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নেইমার, সম্রাট বাবুদের নিয়ে বিপাকে মালিকরা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১২ জুলাই, ২০২১ ০৯:১২

দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় অন্য জেলা বা উপজেলা থেকে ক্রেতা আসতে পারছে না। যারা বাড়িতে বা খামারে আসছেন, তারা কাঙ্ক্ষিত দাম না বলায় গরু বিক্রি করছেন না খামারিরা। অনলাইনেও সাড়া নেই। প্রাণিসম্পদ বিভাগ অবশ্য ১৪ জুলাই থেকে হাট চালুর আশ্বাস দিয়েছে।

কোরবানি ঈদের আগে আগে বিক্রি রমরমা থাকার কথা ছিল। কিন্তু মাদারীপুরের গরু বিক্রি নিয়েই অনিশ্চয়তা। খামারির পাশাপাশি যে কৃষক গরু লালন পালন করে বড় করেছেন, তারাও আছেন দুশ্চিন্তায়।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। সব গরুর হাট বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

অন্যদিকে নদীতে পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ডুবে দেখা দিয়েছে কাঁচা ঘাসের সংকট। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় তৈরি হয়েছে নতুন দুশ্চিন্তা । বাধ্য হয়ে অনেকে কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছে।

দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় অন্য জেলা বা উপজেলা থেকেও ক্রেতা আসতে পারছে না। দুই এক জন যারা বাড়িতে বা খামারে আসছেন, তারা কাঙ্ক্ষিত দাম না বলায় গরু বিক্রি করছেন না খামারিরা। অনলাইনেও সাড়া নেই।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, অনলাইনে গরু বিক্রির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের দুই/চারদিন আগেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিছু হাট-বাজার খুলে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

‘ব্যাপারি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফার্ম’-এ ৩৭টি গরু রয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

রোববার জেলার শিবচর উপজেলায় পুরাতন কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে চেয়ারম্যান গেট এলাকায় গিয়ে কথা হয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ব্যাপারির সঙ্গে।

৫ বছর আগে ৪০ বিঘা জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘ব্যাপারি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফার্ম’। খামারে ৪০০ থেকে ৮০০ কেজি ওজনের ৩৭টি গরু রয়েছে। এদের দেখভাল করে ছয়জন শ্রমিক। খামার মালিকের জমিতে চাষ করা ঘাসই খাওয়ানো হয় পশুগুলোকে।

নাসির উদ্দিন ব্যাপারি বলেন, 'ঈদের এই সময়ে খামারে একটা গরুও অবিক্রিত থাকত না। অথচ গত সপ্তাহে মোটে একজন এসে ঘুরে গেছেন। আজ একজন এসেছিলেন। আমি যে দাম চাইলাম, তার অর্ধেক বলেছেন।’

উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামের কালাম শিকদার। পেশায় কৃষক। তিন বছর আগে ৪৮ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে সেটি বড় করেছেন। নিজে ব্রাজিল ভক্ত। গরুটিকে দেশটির তারকা ফুটবলারের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রেখেছেন ‘নেইমার’।

কালাম শিকদার ব্রাজিল ভক্ত। তাই তার গরুর নাম রেখেছেন ‘নেইমার’। ছবি: নিউজবাংলা

গরুটির ওজন হবে প্রায় ১৮ মণ। গত কয়েকদিনে তিনি স্থানীয় কয়েকটি নিউজ পোর্টালে বিজ্ঞাপন দিয়েও ক্রেতার নজর কাড়তে পারেননি। তিনি গরুটির দাম চান ৭ লাখ টাকা।

উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের মধ্যআলেপুর গ্রামের কৃষক মোশাররফ ঢালীর ষাঁড় ‘সম্রাট বাবু’। লম্বায় ৯ ফুট ও উচ্চতা ৬ফুট। ওজন প্রায় ৩০ মণ। বয়স দুই বছর এক মাস।

মোশাররফ ষাঁড়টির দাম হাঁকছেন ১২ লাখ টাকা। তবে চাহিদা মতো দাম না পাওয়ায় বিক্রি হচ্ছে না।

মধ্যআলেপুর গ্রামের কৃষক মোশাররফ ঢালীর ষাঁড় ‘সম্রাট বাবু’। ছবি: নিউজবাংলা

রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামের ‘আদর্শ পশু পালন কেন্দ্র’র মালিক মাস্টার আব্দুর রশিদ জানান, তার খামারে কোরবানির যোগ্য গরু রয়েছে ৮৩টি। গরু প্রতি প্রতিদিন প্রায় দুইশ টাকা হিসেবে তার দিনের খরচ ১৬ হাজার টাকা।

খামারে ৬ থেকে ৮ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে। গত বছরের বন্যায় তার খামারের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। কোরবানির ঈদে তার খামারের গরু বিক্রি করতে না পারলে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবেন না।

জেলার উতরাইল হাট, মাদবরেচর হাট, চান্দেরচর হাট, শেখপুর বাজার, ছিলারচর হাট, কালিরবাজার, টেকের হাট, শশিকর বাজার, ডাসার বাজার, কালকিনি পৌর বাজার, শাহেবরামপুর হাট, গোপালপুর হাটসহ আরও অনেকগুলো বড় বড় পশুর হাট রয়েছে।ন

করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে এসব হাট বছরের এই সময়ে পশু ও ক্রেতা বিক্রেতার সমাগমে থাকত জমজমাট।

শিবচর উপজেলার মাদবরের হাটের ইজারাদার সেলিম মাদবর বলেন, প্রতি হাটে কমপক্ষে দুই আড়াই হাজার পশু বিক্রি হতো। এইবারে লকডাউনে হাটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঈদের আগে হাটগুলো খুলে দেয়া না হলে তাদের অনেক ক্ষতি হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে.এম আনোয়ারুল হক জানান, জেলায় কোরবানির গরুর চাহিদা রয়েছে ৩৪ হাজার ১২৫টি। লালন পালন হয়েছে ৩৬ হাজার ২২৩টি।

এর মধ্যে খামারি পর্যায়ে মোটাতাজাকরণ করছে ৮হাজার ২৬০টি এবং পারিবারিক পর্যায়ে ২৭ হাজার ৯৭৫টি।

খামারিদের দুশ্চিন্তার বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করে আগামী ১৪ জুলাইয়ের পর সীমিত আকারে হাট বসানোর চিন্তা ভাবনা রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর