নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২ দালাল ও ৫ রোহিঙ্গাকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার দুপুরে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিচারিক আদালতে তোলা হয়। পরে বিকেলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভাসানচরের ৩ নম্বর ল্যান্ডিং পয়েন্টে কোস্টগার্ড পূর্বজোনের চট্টগ্রামের একদল সদস্য তাদেরকে আটক করে।
গ্রেপ্তার রোহিঙ্গারা হলেন ক্যাম্পের ২৫ নং ক্লাস্টারের নুরুল আমিন, ৬৩ নং ক্লাস্টারের হাবিবুল্ললাহ, ৫৬ নম্বর ক্লাস্টারের আবদুস সুকুর, ২৮ নম্বর ক্লাস্টারের নুর কবির ও ৪৭ নম্বর ক্লাস্টারের মো. নয়ন।
এদেরকে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সুবর্ণচরের চরজব্বর পূর্ব চরমুজিব গ্রামের জিল্লুর রহমান ও একই উপজেলার সমিরহাটের আদর্শ গ্রামের আলা উদ্দিন।
কোস্টগার্ড জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভাসানচরের উত্তর পূর্ব কোণে ৩ নং ল্যান্ডিং পয়েন্টের কাছে একটি কাঠের নৌকা দেখতে পায় তারা। কোস্টগার্ডের টহল দলটি সেখানে গেলে দালালরা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ধরা পড়ে যায় তারা।
পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ভাসানচর পুলিশ ও কোস্টগার্ড যৌথ অভিযান চালিয়ে রাত ৮টার দিকে আরেকটি নৌকা থেকে ৫ রোহিঙ্গাকে আটক করে।
কোস্টগার্ড পূর্বজোন চট্রগ্রামের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আব্দুর রউফ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় কোস্টগার্ড পূর্বজোন হয়ে মামলা করার পর আটকদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের তোলা হয়।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে থেকে আছেন আরও প্রায় চার লাখ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ৩৪টি ক্যাম্পে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হয়। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটি ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
সরকার সেখানে মোট এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।
পাশাপাশি সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য আয়ের সুযোগ রেখেছে, শিশুদের জন্য শিক্ষা ছাড়াও নানা সুযোগ-সুবিধা আছে।
রোহিঙ্গারা শুরুতে ভাসানচরে যেতে রাজি ছিল না। তবে পরে সেখানে সুযোগ-সুবিধা দেখে তাদের সন্তোষ প্রকাশের খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।
তবে উন্নত আবাসন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সেখান থেকে পালিয়ে আসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কেউ কেউ কক্সবাজারে ফিরে এসেছেন।