সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে তিন শিশু পালিয়ে গেছে।
রোববার কোনো একসময় ওই তিন শিশু পালিয়ে গেছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন।
ওই তিন শিশুর পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ করে সেখানে ভাঙচুর করে কিশোররা। ওই সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক কিশোর আহত হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবারের ঘটনা ও রোববার পলাতক শিশুদের উদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে আমি সঠিকভাবে জানি না।’
কিশোরদের বিক্ষোভের ঘটনায় চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রকিবুজ্জামান জানান, রাতে কিশোররা বিভিন্ন ভবনের গ্লাস ভেঙে ভেতরে আগুনও দেয়। ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়।
উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ করেছে কিশোররা। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মধ্যরাতেই উন্নয়ন কেন্দ্রে যান জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, কালেক্টরেটের এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এম মামুনুর রশিদ।
আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বিলাল হোসেন।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভ ও অসন্তোষের কারণ বোঝার জন্য কেন্দ্রের তিন কিশোর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন।
ওই তিন কিশোরের অভিযোগ, তাদের পেট ভরে খেতে দেয়া হয় না। দুপুরে আধা প্লেট ভাত, রাতে একটি রুটি দেয়া হয়। স্বজনরা এসে টাকা বা খাবার দিয়ে গেলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সেগুলো তাদের না দিয়ে আত্মসাৎ করে নেয়।
তারা খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি ও মান উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারী কিশোররা শান্ত হয়।
তবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক অসিত কুমার সরকার বলেন, ‘কিশোরদের অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক না। পুলিশ এসেছে। তারা বিষয়টি দেখছে।’
অপ্রাপ্তবয়স্ক অপরাধী ও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ থাকা ছেলেদের জন্য দেশের দুটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের একটি যশোর শহরতলির পুলেরহাট এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রায়ই বিক্ষোভ ও বিদ্রোহ করে থাকে কিশোররা।