নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড কারখানায় শ্রমিকদের তালাবদ্ধ করে রাখার সত্যতা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
তিনি বলেছেন, শিশু শ্রমিকদের কারা এবং কীভাবে কারখানায় কাজ করতে নিয়ে এলো, তা-ও তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার হাশেম ফুড কারখানা পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রূপগঞ্জে আগুনে হতাহত বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে কারখানার কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
মির্জা আজমসহ আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল হাশেম ফুড কারখানা পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন শাহাবুদ্দিন ফরাজী, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।
মির্জা আজম বলেন, ‘হাশেম ফুড কারখানায় যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এখানে ঘটে; ৫২ জন শ্রমিকের এখানে মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের মৃত্যু করোই কাম্য নয়। তারপরও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।’
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী যারা দোষী তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা ও আহতদের জন্য নগদ ৫০ হাজার টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও আহত শ্রমিকদের আরও সহযোগিতা দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকেই অনুমোদন নিয়ে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। এ ক্ষেত্রে যদি কারও দুর্নীতি থাকে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ৮ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে গেছে ৫২ প্রাণ। আহত হয়েছেন অনেক শ্রমিক।
এ ঘটনায় হত্যা ও হত্যার অভিযোগে ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
ওই মামলায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেমসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আটজনকে চার দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয় নারায়ণগঞ্জের আদালত।