যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ করে সেখানে ভাঙচুর করেছে কিশোররা।
ওই সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক কিশোর আহত হয়েছে।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে কিশোররা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করে। ওই সময় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রোকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কিশোররা বিভিন্ন ভবনের গ্লাস ভেঙে ভেতরে আগুনও দেয়। ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়।
উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ করছে কিশোররা। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মধ্যরাতেই উন্নয়ন কেন্দ্রে যান জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, কালেক্টরেটের এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এম মামুনুর রশিদ।
আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বিলাল হোসেন।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভ ও অসন্তোষের কারণ বোঝার জন্য কেন্দ্রের তিন কিশোর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন।
ওই তিন কিশোরের অভিযোগ, তাদের পেট ভরে খেতে দেয়া হয় না। দুপুরে আধা প্লেট ভাত, রাতে একটি রুটি দেয়া হয়। স্বজনরা এসে টাকা বা খাবার দিয়ে গেলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সেগুলো তাদের না দিয়ে আত্মসাৎ করে নেয়।
তারা খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি ও মান উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারী কিশোররা শান্ত হয়।
এনডিসি এ এম মামুনুর রশিদ জানান, কিশোরদের বোঝানো হয়েছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।
তবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক অসিত কুমার সরকার বলেন, ‘কিশোরদের অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক না। পুলিশ এসেছে। তারা বিষয়টি দেখছে।’
এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন জানান, বিক্ষোভে এক কিশোর আহত হওয়ায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মফিজুল ইসলাম নামে ডিবির একজন এসআইও আহত হয়েছেন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক অপরাধী ও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ থাকা ছেলেদের জন্য দেশের দুটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের একটি যশোর শহরতলীর পুলেরহাট এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রায়ই বিক্ষোভ ও বিদ্রোহ করে থাকে কিশোররা।
২০২০ সালের ১৩ আগস্ট কেন্দ্রে তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উন্নয়ন কেন্দ্রের ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এ বছরের ৭ জুন এখানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় তিন কিশোর আহত হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, রাতেই কিশোরদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে কেন্দ্রে পুলিশি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।