চার শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা ও দাফনের এক সপ্তাহ পর জানা গেছে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বসুরধুলজুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনরা জানান, এই গ্রামের ৭০ বছর বয়সী নেছার উদ্দিন গত ৩০ জুন দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে ১ জুলাই রাত পৌনে দশটার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার সময় মৃত্যু হয়।
এর আগেই তার শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
২ জুলাই সকাল সাড়ে দশটার দিকে বসুরধুলজুড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা হয়। জানাজায় অংশ নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), সহযোদ্ধাসহ এলাকার চার শতাধিক মানুষ।
এরপর ৮ জুলাই মাগুরার সিভিল সার্জন ফেসবুক পেজে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করেন। সেখানে নাম পাওয়া যায় নেছার উদ্দিনের।
নেছারের ছোট ভাই ধোয়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তারিকুল ইসলাম তারা মিয়াকে বিষয়টি ফোনে নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মকসেদুল মোমিন।
তবে বিষয়টি জানাজানি হয় শনিবার।
এ বিষয়ে তারা মিয়া নিউজবাংলাকে জানান, তার ভাইয়ের করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। সদর হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে। এক সপ্তাহ পর এখন বিষয়টি জেনে অবাক লাগছে।
কেন এত দেরিতে ফল উত্তরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মকসেদুল মোমিন জানান, ৩০ জুন পাঠানো নমুনা সাতক্ষীরা পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার পর ৮ জুলাই তাদের কাছে রিপোর্ট আসে। রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দীন জানান, তারা সামাজিক দূরত্ব মেনেই গার্ড অব অনার দিয়েছেন। তাই তাদের চিন্তার কিছু নেই।
ইউএনও রামানন্দ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা-দাফন হয়েছে। লোক সমাগমও অনেক হয়েছিল। এখন তার করোনার বিষয়টি জানতে পেরে তার পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাকিদেরও কোয়ারেন্টিন মানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে এখনও ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কারো করোনা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ইউএনও।