বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর কয়েকটি ঘর ভেঙে পড়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে এই ঘরগুলো তৈরি করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ঘরগুলো মেরামত শুরু হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, সরকারি বরাদ্দের পুরো টাকা কাজের পেছনে ব্যয় হয়নি। নির্মাণকাজে উপজেলা প্রশাসনেরও যথাযথ নজরদারি ছিল না। মূলত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধায়নের কথা থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘরগুলো নির্মাণ করেছেন।
ঘর নির্মাণে শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঘর পাওয়া কয়েকজন উপকারভোগী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই নারী ও এক পুরুষ উপকারভোগী জানিয়েছেন, বরাদ্দের তালিকায় নাম ওঠাতে জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঘর দিয়েছেন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের আত্মীয় মো. রাকিব, সরকারি রেশন ভাতাপ্রাপ্ত ভোলা পাসপোর্ট অফিসের আনসার সদস্য মিজানুর রহমান।
তা ছাড়া আধা পাকা দোতলা ভবনের মালিক শ্রীপুর বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মাসুদ ও চৌচালা ঘরের মালিক মাছের ব্যবসায়ী রফিককে তাদের মূল ঘরের পেছনে তুলে দেয়া হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুটি ঘর।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ঘর বরাদ্দ বা নির্মাণের ক্ষেত্রে আমার কোনো হাত নেই। আমি একজন জনপ্রতিনিধি মাত্র। মূলত চেয়ারম্যান নির্বাচনে আমার বিরুদ্ধে গিয়ে মনোনয়ন চাইছেন এমন গুটি কয়েক দলীয় নেতা ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘ঘর বরাদ্দ ও জায়গা নির্বাচন নিয়ে কিছু বলার এখতিয়ার আমার নেই। কারণ আমি এসেছি দুই মাস হলো। প্রথম দফার ঘর নির্মাণ সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সময়ে হয়েছে।
‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের দিনে বাহেরচরের ৪০টি ঘর তিন ফুট পানি উঠে তলিয়ে যায়। ওই দিনই চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন, ঘর ভেঙে পড়েছে। ওখানকার দুটি ঘর পুরোপুরি ভেঙে গেছে, আর ৯টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘ঘর ভেঙে পড়ার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্মাণ ত্রুটিতে নয়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঘর ভেঙে পড়েছে। এরপর ঘর মেরামতে বরাদ্দের আবেদন করা হয়। বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ায় সংস্কারকাজ শুরুতেও সময় নিতে হয়েছে। মিস্ত্রিদের বলা হয়েছে, উপকারভোগীরা যেমন চাইবে সেভাবেই ঘরগুলো মেরামত করে দেবে।’