সড়কের পাশে বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়ানো শিশুটির বাম হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত প্লাস্টার। অপর হাতে একটি পলিথিনের ব্যাগে মাস্ক। সেগুলো বিক্রি করছে সে।
শিশুটির নাম নূরনবী। বাবা হারানো ১০ বছরের নূরনবী পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। থাকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামে নানীর কাছে।
নূরনবী জানায়, গত শনিবার রাস্তার পাশে গাছ থেকে জাম পাড়তে গিয়ে ডাল থেকে পড়ে হাত ভেঙে যায় তার। শ্রমিক নানী বিবিজন বেগম হাত প্লাস্টার করিয়ে এনেছেন, তবে ওষুধ কেনার টাকা নেই তাদের। ভাঙা হাতের চিকিৎসার টাকা জোগাতে তাই মাস্ক বিক্রি করছে সে।
শিশুটি আরও জানায়, তার বাবা ভ্যানচালক অছিম উদ্দিন মাস দুয়েক আগে মারা গেছেন। মা সোনাভান বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন। পাঁচ ভাই-বোনের সবার ছোট সে। বোনদের মধ্যে দুইজনের বিয়ে হয়ে গেছে।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় সংসারে বড়দের সহযোগিতা করত সে। পাশাপাশি গাছ থেকে জাম পেড়ে বাজারে বিক্রি করে কিছু টাকাও আয় করত। হাত ভেঙে যাওয়ায় এখন আর সেই সুযোগ নেই। তাই চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মাস্ক বিক্রি করছে।
বাগভান্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউল আলম জানান, নূরনবীর নানী বিবিজন অত্যন্ত গরীব। শিশুটির হাত ভাঙার বিষয়টি তার জানা ছিল না।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, ‘শিশু নূরনবীর বিষয়ে জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাকে চিকিৎসা দেয়া হবে।
আর তার মা যদি সরকারি ভাতা না পেয়ে থাকেন, তাহলে তাকে বিধবা অথবা প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হবে।’