গাজীপুরের টঙ্গীতে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও তার ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। আর সে ঘটনার মীমাংসার কথা বলে অভিযুক্তের কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পদধারী তিন নেতার বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় এখনও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা যুবক টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মিলগেট চুড়ি ফ্যাক্টরির পেছনের একটি বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ভাড়া থাকেন।
টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করার প্রস্তাব দেয়া ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন এবং সহসভাপতি পারভেজ ঢালী।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে টঙ্গীর কলাবাগান বস্তির এক তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় মাস আগে ওই যুবক তরুণীকে গাজীপুর মহানগরের গাছা (তারগাছ) এলাকার একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও তরুণীর ইমো অ্যাপে পাঠায়। ওই ভিডিওটি এলাকার আরও কয়েকজনের কাছে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওর বিষয়ে কথা বলতে রোববার টঙ্গীর অলিম্পিয়া স্কুল মাঠে অভিযুক্ত যুবককে ডেকে নেন ৫৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন এবং সহসভাপতি পারভেজ ঢালীসহ কয়েকজন যুবক।
সেখানে আমিনুলকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মীমাংসার কথা বলা হয়। এর জন্য এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন নেতারা। এ সময় তারা ওই যুবকের জাতীয় পরিচয়পত্র কেড়ে নিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগরের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি জানান, মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। মেয়েকে অন্যত্র বিয়ের জন্য ২ লাখ টাকায় ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। বাকি অভিযোগগুলো মিথ্যা।
টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সরকার বাবু বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পূর্বেও অভিযোগ ওঠায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বহিষ্কার না করে তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে গাছা থানার তারগাছ এলাকায় একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণের ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। এখনও এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।'
বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ওসি আরও বলেন, ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।