চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অস্ত্র দিয়ে নূর কাদের নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিনের বিরুদ্ধে।
তার ওপর হামলা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার বিকেল চারটার দিকে অস্ত্রসহ ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন চেয়ারম্যান ইয়াছিন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বাহিনীটি বুঝতে পারে, অভিযোগ অসত্য। এরপর ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়ে এখন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড গুলিসহ নূর কাদের নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করেন চেয়ারম্যান। এ সময় চেয়ারম্যান দাবি করেন, তাকে গুলি করেছেন ওই ব্যক্তি।
‘তবে নূর কাদের নামের ওই ব্যক্তির বাম হাত প্লাস্টার করা ছিল। প্রাথমিক তদন্তে আমরা চেয়ারম্যানের অভিযোগের সত্যতা পাইনি বরং নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ওই লোককে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। আমরা আরও গভীরভাবে তদন্ত করছি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
তবে এ বিষয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন।
ভুক্তভোগীর ছেলে মো. রমিচ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা শেখেরখীল ইউনিয়নের বহদ্দারহাট রাস্তার মাথায় একটি দোকানে ছিলেন। সেখান থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন কোনো কারণ ছাড়া তাকে ধরে নিয়ে যান ইউনিয়ন পরিষদে। পরে আমার বাবাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান। আমার বাবাকে যে দোকান থেকে ধরে নিয়েছিল, ওই দোকানে তখন বেশ কিছু মানুষ থাকায় তারা পুলিশকে সত্য ঘটনাটা বলেছে। রাত একটার দিকে পুলিশ আমার বাবাকে ছেড়ে দেয়।’
তিনি বলেন, ‘গত ৫ জুন নুরুল কাদের মাঝি এবং ছগির নামের দুজন আমার বাবাকে মেরে বাম হাতটি ভেঙে দেয়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়েছিল। তারা দুজন চেয়ারম্যানের লোক ছিলেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার বাবার কোনো বিরোধ নেই, বিরোধ ছিল ওই দুজনের সঙ্গে। এর জেরেই চেয়ারম্যান আমার বাবাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন।’
নুরুল কাদের মাঝি এবং ছগিরের সঙ্গে কী নিয়ে বিরোধ ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমার বাবা মাছ ধরতে গিয়েছিল বোটে। এ সময় তাদের লোকসান হওয়ায় মহাজন সবগুলো দেনা মাফ করে দেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর মাঝি ও ছগির আমার বাবার কাছে মহাজনের পাওনা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু টাকা তো আসলে মহাজন মাফ করে দিয়েছেন। তবু এটা নিয়ে সালিশ হয়েছে, আমরা টাকাটা দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ওরা পিছু ছাড়েনি।’