মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের দেয়া উপহারের ঘর বরাদ্দে অনিয়ম পাওয়ায় আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে ইউএনও মো. আসাদুজ্জামানকে মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। সোমবার বিকেলে এ চিঠি পাঠানো হলেও রাতে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
বুধবার দুপুরে ইউএনওকে ওএসডি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে বরগুনার আমতলী উপজেলায় ৩৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ঘরগুলো যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলার অসহায়, গৃহহীন ও দুস্থ পরিবারগুলোকে বরাদ্দ দেয়ার কথা।
তবে এ উপজেলায় বরাদ্দের ১১০টি ঘর গুলিশাখালী ইউনিয়নে অফিস সহকারী এনামুল হক বাদশার মাধ্যমে বরাদ্দ দেন প্রকল্প সভাপতি ইউএনও আসাদ। বাদশার বিরুদ্ধে নিজের আত্মীয়স্বজন এবং টাকার বিনিময়ে অন্যদের এ ঘর পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গত ২২ এপ্রিল গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল রাঢ়ি বরগুনার জেলা প্রশাসকের কাছে ইউএনও ও অফিস সহকারী বাদশার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান পরে তার কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বাদশার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেন তিনি। পরে বাদশাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ছাড়া ৭ জুন বরিশাল বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত করতে আমতলী যায়। তারাও গুলিশাখালীসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্মাণাধীন ঘর পরিদর্শন করে অনিয়ম ও নীতিমালাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পায়। এ বিষয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন জানান, ঘর বরাদ্দে অনিয়ম এবং ঘর নির্মাণ নিয়ে নীতিমালাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ইউনএও আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে অফিস সহকারী বাদশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ইউএনও আসাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’