শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহারশী নদীতে স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতি বছরই প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। পানি ওঠে উপজেলা পরিষদসহ সদরের মার্কেটগুলোতে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসায়ী, কৃষকসহ সাধারণ মানুষ।
সীমান্তের ওপার থেকে গারো পাহাড়ের বুক চিরে ঝিনাইগাতী উপজেলা শহর ঘেঁষে বয়ে গেছে পাহাড়ি খরস্রোতা মহারশি নদী। এ নদীই এখন ঝিনাইগাতী উপজেলাসদরসহ অন্যান্য এলাকার মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হলেই নেমে আসে পাহাড়ি ঢল। আর এতেই শান্ত মহারশী হঠাৎ অশান্ত হয়ে ওঠে। ভেঙে যায় মহারশী নদীর কাঁচা মাটির বাঁধ।
প্রবল বেগে পানি ঢুকে পড়ে উপজেলা শহর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল ও লোকালয়ে। এতে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। তাই তারা দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোটের সময় অনেকেই এসে বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটের পর তাদের আর খবর থাকে না।
অথচ বছরে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বার বাড়িঘর, মাছের ঘের বা পুকুর ও ফসলে পানি ঢুকে ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হন তারা।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সব মহলের দাবি এ নদীর মহারশি নদীর বাঁধটি পাকা করে শহর রক্ষাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।
ঝিনাইগাতী বণিক সমিতির সদস্য জাহিদুল হক খান মনি বলেন, ‘মহারশি নদীর কাঁচা বাঁধ ভেঙে প্রতি বছর অন্তত পাঁচ থেকে ছয় বার ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু কেউ এদিকে নজর দেন না। আমরা দ্রুত একটি শক্তিশালী শহর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ চাই।’
ঢলের পানি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ঢুকে পরেছে। ছবি: নিউজবাংলাস্থানীয় বাসিন্দা জহুরা খাতুন বলেন, ‘কেউ আমাগোরে দেহে না। নদীর এই আনডা বাইন্দা দেয়না।’
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জমিলা বেগম বলেন, ‘ভোটের সময় সবাই আইয়া কথা দিয়া ভোট নিয়া যায়। পরে আর আহে না। এবার আইলে ওগোরে আর ভোট দিমু না।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জিয়াছমিন খাতুন জানান, পানি চলে গেলে ভাঙা অংশগুলো মেরমাতের ব্যবস্থা করা হবে। আর স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।