ঢাকা, চট্টগ্রামের পর শাটডাউনে এবার মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পুলিশের বিরুদ্ধে চিকিৎসককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীদুল আলমের বিরুদ্ধে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা কবিরকে চেকপোস্টে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে হেমায়েতপুর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রাজধানীতে এপ্রিলের কঠোর লকডাউনে ডা. জেনিকে পুলিশের হেনস্তার ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় হয়েছিল। গত শুক্রবার চট্টগ্রামে হেনস্তার শিকার হন আরেক চিকিৎসক।
সিংগাইরের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। তবে পুলিশ বলছে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা কবির বলেন, ‘সকালে উপজেলার ফোর্ডনগর কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রওনা দিই। সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছামাত্রই চেকপোস্টের পুলিশ সদস্যরা গাড়ি আটকালে আমার পরিচয় দিই এবং কাজে যাওয়ার কথা জানাই।
‘পুলিশ সদস্যরা জানান, এখানে দায়িত্বে থাকা স্যার অনুমতি দিলে গাড়ি ছেড়ে দিবে। পরে আমার সঙ্গের স্বাস্থ্য পরিদর্শক চেকপোস্টে গিয়ে এসআই শাহীদুল আলমকে বলার পরও আধাঘণ্টা আমাদের আটকে রাখেন। তখন লোকজন জড়ো হতে থাকেন। প্রকাশ্যে এভাবে একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অপমান হতে হলো। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই।’
এ বিষয়ে এসআই শহীদুল আলাম বলেন, ‘কঠোর লকডাউনের কারণে রাস্তায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে গাড়ি চেক করার সময় ওই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।’মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার সঙ্গে চেকপোস্টে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তার সমাধান হয়ে গেছে। আরও সর্তক হয়ে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে সব পুলিশ সদস্যকে।
মানিকগঞ্জের সিলিভ সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পরিচয় দেয়ার পরও তার কাজে বাধা এবং গাড়ি আটকে রাখা এটা খুবই অপমান ও দুঃখজনক। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযুক্ত এসআই শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়া উপজেলা সদরের কলেজ রোডে চট্টগ্রামে ফরহাদ কবির নামের এক চিকিৎসককে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ফরহাদ সাতকানিয়ার আলফা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনোসিস সেন্টারের চিকিৎসক।
রাজধানীতে এপ্রিলের কঠোর লকডাউনে ডা. জেনিকে পুলিশের হেনস্তার ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় হয়েছিল। ১৮ এপ্রিল কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ডা. সাঈদা শওকত জেনির গাড়ি আটকে তার পরিচয়পত্র দেখতে চান নিউমার্কেট থানার ওসি। ওই গাড়িতে চিকিৎসকের কর্মস্থল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের স্টিকার লাগানো ছিল। তার গায়েও ছিল অ্যাপ্রোন। তবুও ওসি চাপ দিতে থাকলে তর্কাতর্কি হয়। ডা. জেনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ওই ঘটনার আংশিক ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।