বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

  •    
  • ৫ জুলাই, ২০২১ ২৩:৫৯

‘দেশের অন্য এলাকার চেয়ে কক্সবাজারের পরিস্থিতি ভিন্ন। এখানে জেলার বাসিন্দাদের পাশাপাশি কক্সবাজারের ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। সে কারণে স্থানীয় পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই মিয়ানমার থেকে পশু আসতে দেয়া উচিত।’

ঈদুল আজহায় দেশের খামারিদের স্বার্থের কথা কথা চিন্তা করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।

এতে খামারিরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও গরু আমদানিতে জড়িত ব্যবসায়ীরা নাখোশ। আর কক্সবাজারে যেহেতু রোহিঙ্গা ক্যাম্প আছে, তাই স্থানীয় পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। তাই কেবল এই জেলার জন্য হলেও পশুর আমদানির সুযোগ দেয়া উচিত।

সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ জানান, মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে পশু আমদানি করে আসছিল। ফলে এখন সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের খামারিদের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

ঈদে বিক্রির আশায় দেশের হাজার হাজার খামারি বা কৃষক পশু মোটাতাজা করেন। এর বাইরে নয় কক্সবাজারও। তবে এই মৌসুমে পশু চোরাচালান বা আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। কারণ, দেশের বাইরে থেকে চালান এলে পশুর দাম কমে যায়।

দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে মিয়ানমার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হয়ে গবাদি পশু আসছিল, সেগুলো শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে প্রতি গরু-মহিষ থেকে ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করে বৈধ করা হতো। পরে সেগুলো বাজারে কেনা-বেচা করা হতো।

সোমবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ ভর্তি কোনো ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে আসেনি।

এর আগে জুলাই মাসের চার দিনে মিয়ানমার থেকে ৮৩টি গরু এসেছিল।

রোববার বিকেলে জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির একটি জুম মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় টেকনাফ সীমান্তের মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধের।

টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মো. আব্দুন নুর বলেন, ‘কক্সবাজার জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। এরপরও কেউ পশু আমদানি করে থাকলে তাদের বিষয়ে অবৈধ চোরাচালান আইনে মামলা দেয়া হবে।’

তিনি জানান, ওই বৈঠকের আগে মিয়ানমার থেকে যেসব পশু আমদানি করা হয়েছে সেগুলো ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

গত মে ও জুন- এই দুই মাসে মিয়ানমার থেকে ২৫ হাজার ৮৬৮টি গরু ও ৪ হাজার ২৫৮টি মহিষ আমদানি হয়েছে। আর আমদানি বাবদ এক কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে শুল্ক বিভাগ।

এর আগে মার্চ-এপ্রিল মাসে ১১ হাজার ৮৮৬টি গরু ও দুই হাজার ৪২৪ টি মহিষ আমদানি বাবদ ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা শুল্ক আদায় করে কাস্টমস।

তবে এই সিদ্ধান্তে পশু আমদানির সঙ্গে জড়িতরা নাখোশ।

টেকনাফ উপজেলার পশু আমদানিকারক সমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সৈয়দ বলেন, ‘সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময় হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের শত কোটি টাকার লোকসান পোহাতে হবে। কারণ, মিয়ানমারে পশু ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা দাদন দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।’

তার দাবি, ‘দেশের অন্য এলাকার চেয়ে কক্সবাজারের পরিস্থিতি ভিন্ন। এখানে জেলার বাসিন্দাদের পাশাপাশি কক্সবাজারের ১১ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। সে কারণে স্থানীয় পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই মিয়ানমার থেকে পশু আসতে দেয়া উচিত।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘বিশেষ করে দেশের খামারিদের কথা ভেবে সরকার মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এখন থেকে কোনোভাবেই মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আমদানি করা যাবে না।’

টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শওকত আলী জানান, টেকনাফে আড়াই শতাধিক পশু খামার রয়েছে।এর মধ্য অর্ধশতাধিক বড় খামার। তাছাড়া কোরবানি মৌসুমে আরও অনেক মানুষই পশু মোটাতাজা করেন।

এসব খামারে প্রায় ২০ হাজার গরু মহিষ ও ছাগল রয়েছে। যা কোরবানি ঈদে হাটে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এই উপজেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৮ হাজার।

এ বিভাগের আরো খবর