মায়ের জন্য অভিমানী চিরকুট রেখে ১৪ বছরের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
চিরকুটে লিখা ছিল, ‘মা, আমার নামে তারা যে বদনাম ছড়িয়েছে তাতে আমি এ পৃথিবীতে থাকতে পারছি না। আমি একটা খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। আমাকে কেউ বিশ্বাস করে না। কেউ না তুমি ছাড়া।’
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা পৌর শহরের খামারবাড়ি এলাকায়। সোমবার নিজ বাসার বাথরুম থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক হয়েছেন অভিযুক্ত যুবক।
এলাকাবাসী জানায়, বিয়ে বিচ্ছেদের পর ওই কিশোরীর মা আবার বিয়ে করেন। মা ও দ্বিতীয় বাবার সঙ্গে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা। বাসায় ওঠার পর থেকেই বাড়িওয়ালার ছেলে কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন।
কিশোরীর মা জানান, অভিযুক্ত যুবক প্রায়ই বাথরুমে উকি দিতেন এবং অশ্লীল ইঙ্গিত করতেন। বিষয়টি বেশ কয়েকবার তার পরিবারকে জানানো হয়েছিল।
গত শনিবার বাথরুমে কিশোরী গোসল করার সময় ওই যুবক উঁকি দিলে মেয়েটি পানি ছুড়ে মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবক গালিগালাজ করে মেয়ের নামে বদনাম রটিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। রোববার কিশোরীর সঙ্গে ওই যুবককের সম্পর্ক আছে বলে গুজব রটে গোটা এলাকায়।
কিশোরীর বান্ধবী বলেন, ‘সকাল দশটার দিকে বাথরুমে ঢুকে সময় দরজা বন্ধ করে রাখায় ফাঁক দিয়ে দেখি ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে সে ঝুলে আছে। আমি চিৎকার করলে সবাই এসে তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
তার বান্ধবী আরও বলেন, ‘ওদের বাসার মালিকের ছেলে অনেক বিরক্ত করতো। গোসলখানার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে থাকতো। হয়তো এগুলো সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্তের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। সেটি পরীক্ষা করা হবে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মেহেদী হাসান আরও বলেন, এ ঘটনায় কিশোরীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে এলাকাবাসী একজনকে অভিযুক্ত করেছে। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।