টানা চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কুমিল্লা নগরবাসী। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শিক্ষাবোর্ডসহ অলিগলি ভাসছে পানিতে। ঘরে ঘরে পানি ওঠায় সন্তানদের নিয়ে খাটের ওপর বসে আছেন অনেক বাবা-মা।
কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া জানান, রোববার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতায় নগরীতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ।
নগরীর রেসকোর্স, চাঁনপুর, ফৌজদারি, চর্থা, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সড়ক, হাউজিং এস্টেট, সংরাইশ, ঠাকুরপাড়া, শিক্ষাবোর্ড, মহিলা কলেজ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
হাউজিং এলাকার বাসিন্দা নূরনবী জানান, ‘গত বুধবার ও রোববার ভোরের বৃষ্টিতে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকেছে। আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। ভোর রাত থেকে ঘরের পানি বালতি দিয়ে বাইরে ফেলার চেষ্টা করছিলাম। পরে এতো জোরে বৃষ্টি আইলো, ছেলেমেয়ে নিয়া খাটের উপর বইসা পড়ছি।’
নগরীর পূর্বাঞ্চলের চকবাজার, গর্জনখোলা, কাপড়িয়াপট্টি, ছাতিপট্টি, গোয়ালপট্টিসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ড্রেনের আবর্জনার পানি ঘরে ঢুকেছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
ছাতিপট্টি এলাকার বাসিন্দা জিদান বলেন, ‘ঘরে পানি, রাস্তায় পানি। বাড়তে বাড়তে পানি খাটের সমান হইয়া গেছে। আমার ছোট ছেলেটাকে নিয়া বিপদে আছি। পাশে কচু ক্ষেত। সাপের খুব ভয়। কি যে বিপদে আছি ভাইরে বইলা শেষ করন যাইতো না।’
নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ী, বিসিক শিল্পনগরী, ধর্মপুর খাদ্য গোডাউন এখন পানির নিচে৷ একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে বিদ্যুৎ নেই। এক অবর্ণনীয় কষ্টে দিনপার করছেন বলে জানান ওইসব এলাকার লোকজন।
টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কুমিল্লা নগরবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা তৈয়বুর রহমান জানান, ‘টানা বৃষ্টিতে ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ নেই। কি যে কষ্ট পাচ্ছি তা বলে শেষ করা যাবে না।’
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের আবাসিক ভবনগুলো পানির নিচে। বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তার ঘরে কোমর সমান পানি উঠেছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও পানি ঢুকে পড়েছে। হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, এক্সরে রুমে পানি। চিকিৎসকরা সেবা দিতে পারছেন না। রোগীরাও দুর্ভোগে পড়েছেন।
নগরীজুড়ে জলাবদ্ধা নিয়ে কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে৷ কাজ শেষ হলে দুর্ভোগ আর থাকবে না।