শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে কুমিল্লায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক জমায়েতে শতাধিক লোককে আপ্যায়ন করা হয়েছে।
রোববার বিকেল ৩টায় বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে সভাটি হয়। সভা প্রধান ছিলেন পীরযাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জাহের।
গ্রাম এলাকায় যে ধাত্রীরা কাজ করেন তাদেরকে ডেকে এনে এই সভাটি করা হয়। সভাটি ‘জসিম বুড়িচং উপজেলা যুবলীগ’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
জসিম স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য।
তবে এই সভার বিষয়ে জানতেন না উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মীর হোসেন মিঠু। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেখানে সর্বত্র লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে কীভাবে সভা হয় তা আমার জানা নেই।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে ওই সভার মধ্যমণি পীরযাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জাহেরের মোবাইল ফোনে একাধিক ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা বিধিনিষেধের মধ্যে এই ধরনের আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন,আইন সবার জন্য প্রযোজ্য নয় কি না।
সম্প্রতি জেলার বুড়িচং উপজেলায় করোনা সংক্রমণ হার বেড়েছে। আজকে যাদের পরীক্ষার ফলাফল এসেছে, তাদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের ৭ জনই করোনায় পজিটিভ বলে শনাক্ত হয়েছে।
এই অবস্থাতেও মানুষকে নিয়ে জমায়েতের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ‘১৩ টি গ্রামের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করেছি। নাস্তায় দুটি করে মিষ্টি, একটি করে পেটিস দেয়া হয়। নাস্তাগুলো চেয়ারম্যান জাহের হোসেন নিজেই আসার সময় নিয়ে এসেছিলেন।’
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রোকসানা খানম মুন্নি বলেন, ‘করোনাকালীন গর্ভবতীদের সেবার জন্য ১৩ টি গ্রামের ১৩ জন দাত্রী উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে এতজন উপস্থিত থাকা দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
পীরয়াত্রাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা চিকিৎসক বাবুল হোসেন দাবি করেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সভার আয়োজন করেছেন।
কুমিল্লা জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক মাহবুবুল করিম বলেন, ‘করোনাকালে সভা সেমিনার একদম নিষিদ্ধ। তবে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া চলবে। কিন্তু লকডাউন অমান্য করে কীভাবে সভা সেমিনার হয় তা আমার বোধগম্য নয়।’
কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, ‘করোনাকালে এ রকম সভা করা অত্যান্ত দুঃখজনক।’