বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় প্রভাষক মুন্নার মা-বাবা

  •    
  • ৪ জুলাই, ২০২১ ২১:২১

‘আমার সোনার টুকরা ছেলে…কারো সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়াতো না সে। কিন্তু আমাকে কাঁদিয়ে চলে গেল আমার ছেলে।’

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে ডুবে মারা যাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুর রহমান মুন্না ছিলেন মা-বাবার একমাত্র ছেলে। তাকে হারিয়ে পাগল প্রায় তারা।

মুন্নার এভাবে চলে যাওয়া মানতে পারছেন না তারা। বারবার সিক্ত হয়ে উঠছে বাবা-মার চোখ। সন্তানের বিভিন্ন কাজ ও স্বপ্ন নিয়ে করছেন বিলাপ।

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) প্রভাষক মুন্নার পরিবারের সদস্য চারজন। বাবা আব্দুল মমিন চুয়াডাঙ্গা প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার। মা মাহাবুব আরা মিতা গৃহিনী। আর ছোট বোন ফারহানা আফরোজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী।

বাবা আব্দুল মমিন বলেন, ‘মুন্না আমার খুব আদরের ছেলে। গতকাল সকালে মায়ের সঙ্গে খাওয়ার পর পৌরসভায় গিয়েছিল ট্রেড লাইসেন্স করবে বলে। তারপর সে আর বাড়ি ফেরেনি।

‘সে সাঁতার জানত না। তার অপর দুই বন্ধুও সাঁতার জানত না। অল্প পানিতে নেমে হঠাৎ তলিয়ে যায় সে।’

বোন ফারহানা আফরোজ বলেন, ‘আমার ভাই উদ্যোক্তা হতে চেয়েছিল। ব্যবসা করতে চেয়েছিল। তার ছিল লিডারশিপের মনোভাব। নিজে অন্যকে চাকুরি দেবে, এটাই ছিল তার লক্ষ্য।’

তিনি জানান, মুন্না মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করতেন। সেজন্য অ্যাস্ট্রোনমি বাংলা নামে ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলেন। সেখানে মহাকাশ সম্পর্কে নানা বিষয় সহজে বোঝানো হতো।

ঘটনার দিন দুই বন্ধুকে নিয়ে নদীর তীরে ওই বিষয়ে পরিকল্পনা করতে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।

মুন্নার মা মাহাবুব আরা মিতা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার সোনার টুকরা ছেলে…কারো সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়াতো না সে। কিন্তু আমাকে কাঁদিয়ে চলে গেল আমার ছেলে।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী মুন্নার আগ্রহ ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ২০০৫ সালে উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান তিনি। ২০১১ সালে চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এ প্লাস পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।

ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে পড়ার সুযোগ পান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়েছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং অর্থনীতিতে। তবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আগ্রহ থাকায় ভর্তি হননি।

২০১৪ সালে ভর্তি হন এআইইউবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। সেখানে পড়াশোনা শেষে ভালো ফল অর্জন করে ওই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান।

শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হন এআইইউবির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক মাইনুর রহমান মুন্না। নিখোঁজের প্রায় ৬ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

এ বিভাগের আরো খবর