নোয়াখালীর ভাসানচরে ডুবে যাওয়া একটি বালুবাহী বলগেটের (ছোট জাহাজ) পাঁচ নাবিককে উত্তাল সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেছে পোর্টল্যান্ড গ্রুপের জাহাজ এমভি ওটি চিটাগং। শনিবার দুপুর ২টার দিকে নাবিকদের উদ্ধার করা হয়।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটির নাম এমভি একরাম জুনায়েদ-২, মালিক ঢাকার সুমন হাজী। জাহাজটি বালু বোঝাই করে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে যাচ্ছিল।
উদ্ধার হওয়া নাবিকরা হলেন- আবদুল মালেক, শাহিন মিয়া, জসিম উদ্দিন, মেহেদি হাসান ও আসাদ। তারা বরিশালের বাসিন্দা।
এমভি ওটি চিটাগংয়ের সুপারভাইজার রুবেল নিজাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাসানচরের ২ নম্বর গ্রিন বয়া নামক স্থানে বালুবাহী বলগেটটি ডুবে যায়। এরপর সেটিতে থাকা পাঁচজন নাবিক সাগরে ঝাঁপ দেয়। আমরা ওই পথে চট্টগ্রাম আসছিলাম। জাহাজের মাস্টার ওই নাবিকদের ডুবতে দেখে বিষয়টি আমাকে জানায়। এরপর আমরা জাহাজের ছাদে গিয়ে রশি ফেলে পাঁচ নাবিককে উদ্ধার করি।’
রুবেল নিজাম আরও বলেন, ওই জাহাজের নাবিকরা জানিয়েছেন, ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকে তাদের জাহাজটি বিকল হয়ে যায়। দুপুর ১টার দিকে তাদের জাহাজটি পুরোপুরি ডুবে যায়। ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত পাঁচজন নাবিক উত্তাল সমুদ্রে ভেসে ছিল। পরে আমাদের জাহাজে উঠেন তারা।
দুর্ঘটনাকবলিত এমভি একরাম জুনায়েদ-২ এর নাবিক আবদুল মালেক বলেন, প্রথমে আমাদের জাহাজের ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। বার বার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। পরে দেখি ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকে গেছে। এরপর আমাদের আর কিছু করার ছিল না। বলগেটটি ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকে। তখন আমাদের আশপাশে কোনো জাহাজও ছিল না। তাই কাউকে সাহায্যের জন্য সিগন্যালও দিতে পারিনি। এই অবস্থায় আমরা লাইফ জ্যাকেট পরে উত্তাল সমুদ্রে ঝাঁপ দিই। পরে এমভি ওটি চিটাগং আমাদেরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম নিয়ে আসে।
সন্ধ্যায় ৬টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ১৪ নম্বর ঘাটে এসে পৌঁছে এমভি ওটি চিটাগং। এরপর উদ্ধার নাবিকদের কোস্টগার্ডের কাছে নেওয়া হয়।
কোস্টগার্ডের চট্টগ্রামের মিডিয়া কর্মকর্তা মজনু মিয়া বলেন, উদ্ধার পাঁচ নাবিকের তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। তাদের কোনো সমস্যা না থাকায় নাবিকদের আমরা ছেড়ে দিয়েছি। পাশাপাশি ওই বলগেটের মালিকের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সেটি উদ্ধারে সহযোগিতা করা হবে।
অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. সেলিম বলেন, ভাসানচরের ২ নম্বর গ্রিন বয়া নামক স্থানে বালুবাহী একটি বলগেট ডুবে যাওয়ার খবর শুনেছি। রোববার এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।