নির্মাণের এক বছরের মধ্যে বেহাল খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বিটুমিন উঠে ছিটকে পড়েছে। কোথাও তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। মাঝেমধ্যে পিচ সরে গিয়ে দলা পাকিয়ে তৈরি হয়েছে উঁচু ঢিবি। এ ছাড়া অনেক জায়গায় সড়কও দেবে গেছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) জানিয়েছে, সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর থেকে ঢাকা ও মোংলা বন্দরে যাতায়াত দ্রুত ও সহজ করতে এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়।
শিল্প কারখানার সংখ্যা এবং আমদানি-রপ্তানি বাড়ায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, পুরুত্বসহ ধারণক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এতে খরচ হয় ২৬৫ কোটি টাকা।
সওজ জানিয়েছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০২০ সালের জুনে। এ প্রকল্পের আওতায় খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে আঠারো মাইল পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য ১৪০ কোটি টাকা এবং আঠারো মাইল থেকে সাতীরা পর্যন্ত প্রশস্ত করার জন্য ১২৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
আঠারো মাইল-সাতীরা সড়ক প্রশস্ত করার কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। জিরোপয়েন্ট-আঠারো মাইল পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজ করেছে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ।
কিন্তু বছর পার হতেই বেহাল হয়ে পড়েছে সড়ক। সরেজমিনে দেখা যায়, জিরোপয়েন্টের কাছে নিচখামার, কৈয়া বাজার গুটুদিয়া স্ট্যান্ড, ডুমুরিয়া বাজার ও চুকনগর বাজার মোড়ের সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া মাঝে মাঝে সড়ক ফুলে উঠেছে। কোথাও দেবে গেছে।
টিপনা নতুন রাস্তার বাসিন্দা সরদার রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়েছে এক বছরও হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে সড়ক ফের নষ্ট হয়ে গেছে, যা অপ্রত্যাশিত। কারণ অনেক ভোগান্তি ও আন্দোলনের পর এ সড়কের উন্নয়ন হয়েছে।’
ডুমুরিয়ার বাসিন্দা নিলয় বিশ্বাস বলেন, ‘সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করা হয়েছে। পুরোনো খোয়া ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে সড়ক দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থায়িত্ব লাভ করছে না।’
গাড়িচালক এরশাদ বলেন, ‘নতুন করা মহাসড়ক। কোথাও খারাপ নেই চালকরা এমন মনে করে গাড়ি চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটছে। গর্তে চাকা পড়ে উল্টে যাচ্ছে। এ ছাড়া গর্তে চাকা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই বছর রক্ষণাবেক্ষণ করবে এমন চুক্তি রয়েছে। বৃষ্টির পর তারা মেরামত করবে এবং মহাসড়কটি পরিদর্শনে যাবে।’
এত দ্রুত মহাসড়কটি কেন নষ্ট হলো, এমন প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যান তিনি।