করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও চলছে শাটডাউন।
আগের লকডাউনে জেলাবাসী বিধিনিষেধ ঠিক মতো না মানলেও এবার চিত্র ভিন্ন। পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকায় প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে খুব একটা বের হতে দেখা যায়নি।
সাত দিনের লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সড়কগুলোতে ছিল না কর্মমুখী মানুষের ভিড়। ছিল না যানবাহনের শব্দ। দোকানপাটও ছিল বন্ধ।
শুক্রবারও শহরের কাউতলী, ভাদুঘর, কুমাড়শীল মোড় ও টি এ রোডসহ প্রধান এলাকাগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছেন ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। বিভিন্ন মোড়ে রয়েছে একাধিক চেকপোস্ট।
শহরের টি এ রোডের প্রধান সড়কে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট সিও-৬ বেঙ্গলের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনতাছির ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিন সারোয়ারের নেতৃত্বে জন ও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সড়কে বের হওয়া সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন সেনা-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদে বের হওয়ার কারণ শুনে তাদের চলাচল করতে দেয়া হয়। বিনা কারণে বের হলে করা হয় জরিমানা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনতাছির বলেন, ‘সরকারের আদেশ অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য দায়িত্ব পালন করছি। যেন এই লকডাউনটা সঠিকভাবে সবাই পালন করতে পারে।’
তিনি জানান, শাটডাউন কার্যকরে জেলার ৯ উপজেলায় সেনা দল টহল দিচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে আছে আরও দুটি দল। প্রতি দলে আছেন ১০ জন সেনা সদস্য। পরিস্থিতি খারাপ হলে টহল দল আরও বাড়ানো হবে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শাটডাউনের দ্বিতীয় দিনে জেলার ৯ উপজেলায় ৩৫৪ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় আদায় করা হয় ১ লাখ ৯০ হাজার ৬৫০ টাকা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, বিভিন্ন ধারা ভঙের অপরাধে ২৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৭২টি মামলায় এ জরিমানা করা হয়।
তিনি আর জানান, এ দিন সেনাবাহিনীর পাঁচটি, বিজিবির ছয়টি, র্যাবের তিনটি ও আনসার সদস্যদের একটি দল টহল দেয়।
শাটডাউনের আগে এক মহড়ায় জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান জানিয়েছিলেন, বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনে মাঠ পর্যায়ে ৩০-৩৫ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া ৫০০ পুলিশ, ৩ প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে সেনা, বিডিআর ও আনসার বাহিনী মোতায়েন থাকবে।