করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শাটডাউনের নির্দেশ উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর গলাচিপায় বসেছে পশুর হাট।
উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নে নলুয়াবাগী হাটে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশ মাড়িয়ে হাটে দিনভর গাদাগাদি করে ঘোরাফেরা করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। বিকেলে টনক নড়ে প্রশাসনের। পৌনে ৫টার দিকে উপজেলা প্রশাসন হাটটি গুঁড়িয়ে দেয়। তবে কাউকে আটক বা জরিমানা করা হয়নি।
স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতি শুক্রবার এখানে পশুর হাট বসছে। যথারীতি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে জমতে থাকে হাট। জেলার বাইরে থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানে গরু, মহিষ ও ছাগল নিয়ে আসেন। সাপ্তাহিক এই হাটে ৭০০ থেকে ৮০০ পশু কেনাবেচা হয়ে থাকে। তবে ভোর থেকে বৃষ্টির কারণে পশুর সংখ্যা কিছুটা কম ছিল।
নলুয়াবাগী হাটে পশু কিনতে যাওয়া গরু ব্যবসায়ী সহিদ প্যাদা বলেন, ‘সকাল অইতে অনেক গরু দ্যাখছি, একটাও পছন্দ অয় নাই। শ্যাষ ব্যালায় যহন একটা পছন্দ অইল, তহনই প্রশাসন আইয়া পিডাইয়া খ্যাদাইয়া দেলো। কেনু খাওয়ার ডরে গরু না কিন্না খালি আতে ফিররা আইছি।’
সহিদ জানান, বিকেল পৌনে ৫টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি গিয়ে পশুর হাটটি বন্ধ করে গুঁড়িয়ে দেন। এর আগে সকাল থেকে বেচাকেনা ভালোই চলছিল।
সহিদ প্যাদার ভাষ্য, ‘ভাই মোরা গ্রামের মানু মোগো করোনা মরোনা অয় না। হেই জন্য অই মাস্কমোক্স কেউ পরে নাই।’
উপজেলার পক্ষিয়া এলাকার আরেক ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আইজ মোট তিনটি ট্রলারে গরু আইছে। সব মিলিয়ে আনুমানিক পাঁচ শ গরু, ছাগল ও মহিষ হাডে উডানো অইছিল। অ্যার মধ্যে হয়তো তিন থেকে সাড়ে তিন শ গরু-ছাগল কেনাবেচা অইছে।’
নাসিরের ভাষ্যমতে, নোয়াখালী আর বাকেরগঞ্জ থেকে গরুভর্তি দুটি ট্রলার এসেছিল। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও অনেক গরু নেয়া হয়েছিল ওই হাটে। শেষ বিকালে যেসব পশু ওই হাটে ছিল, সেগুলো প্রশাসন ট্রলারে উঠিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
হাটের ইজারাদার শাহ মেহেদি ফাহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশিষ কুমার বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে থানার ওসি ও গোলখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে হাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। তারা সেখানে গিয়ে সবাইকে সরে যেতে বলেন। তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর লোকজন আবার জড়ো হয়ে কেনাবেচা চলমান রাখেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং গলাচিপা থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে হাটটি গুঁড়িয়ে দিই।’
ইউএনও জানান, ‘নলুয়াবাগী হাট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানে যেতে অনেক কষ্ট। তা ছাড়া কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক কষ্ট করে মানুষ এসেছিলেন পশু কিনতে। সে দিকটা বিবেচনা করে সরকারের নির্দেশনা মানার পরামর্শ দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে এসেছি।’