বিয়ে করে কনেকে নিয়ে ফিরছিলেন বর। পথে পুলিশ আটকে দেয় বর-কনেবাহী মাইক্রোবাসটি।প্রথমে দুইপক্ষের কিছুটা বাবকিতণ্ডা হয়। এরপর পুলিশ ডাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে। ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে বরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরের প্রবেশমুখ হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।বরপক্ষের লোকজনের দাবি, লকডাউন ঘোষণার আগেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছিল। তারিখ পেছাতে না পারায় তারা সীমিত পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা মেনেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বর-কনেবাহী একটি মাইক্রোবাস হুমায়ূন রশিদ চত্বর এলাকায় আসলে পুলিশ গাড়িটি আটকায়। নোহা মাইক্রোবাসে বসা ছিলেন বর-কনেসহ ৯ জন। লকডাউন ভাঙার কারণ জিজ্ঞেস করলেও সদুত্তর দিতে পারেননি তারা।গাড়ির ভেতরে বর ও কনে দেখে খবর দেয়া হয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।বরপক্ষের লোকজন জানান, লকডাউনে সবধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আছে সেটা তারা জানতেন। কিন্তু বিয়ের তারিখ আগেই ঠিক থাকায় বিশেষ অসুবিধার কারণে তারা তারিখ পরিবর্তন করতে পারেননি। তাই সীমিত পরিসরে শুধু একটিমাত্র মাইক্রোবাস নিয়ে তারা কনেকে আনতে গিয়েছিলেন। এরমধ্যেই তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে।সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, শাটডাউন অমান্য করে বিয়ের আয়োজন করায় বরকে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে।
আগের দিন ভোর থেকে সারাদেশে শুরু হওয়া শাটডাউনে একসঙ্গে জড়ো হওয়া তো দূরের কথা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতেই নিষেধ করা হয়েছে।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এখন পর্যন্ত যতবার বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে প্রশাসন সবচেয়ে বেশি কঠোরতা দেখাচ্ছে এবার। জনগণকে ঘরের ভেতরে রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীও।
এদিকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় শুক্রবার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ভোজ বন্ধ করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কনের পরিবার এই ভোজের আয়োজন করেছিল। তাদেরকে সাজা না দিয়ে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করা হবে না-এমন মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
আর আদালতের এই হস্তক্ষেপের খবর পেয়ে বরপক্ষ আর বিয়ের আয়োজনে আসেইনি।
উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ বাজারের জহুরা কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে এমন খবরে সেখানে যান ছাতকের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপশ শীল। তিনিই সেখানে ভোজের আয়োজন ঠেকিয়ে দেন।
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে একটি বিয়ের ভোজ বন্ধ করে খাবার দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে বিয়েতে বাধা দেয়া হয়নি। সংক্ষিপ্ত আয়োজনে বিয়ে পড়িয়ে কনেকে নিয়ে বাড়ি যায় বরপক্ষ।
শুক্রবার দুপুরে পাটাভোগ ইউনিয়নের জশুরগাঁও গ্রামে নিমাইপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পাটাভোগ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য নজরুল ইসলামের ভাই মো. বাবু ও স্থানীয় বাসিন্দা বাঁধন আক্তারের বিয়েকে কেন্দ্র করে সেখানে ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল।