বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জুমায় মসজিদে মসজিদে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

  •    
  • ২ জুলাই, ২০২১ ১৯:৫২

রংপুরের অধিকাংশ মসজিদে মুসল্লিদের মাঝে ছিল না সামাজিক দূরত্ব। তারা গায়ে গা ঘেঁষে দীর্ঘ সময় খুতবা শোনেন। একই অবস্থা গ্রামের মসজিদেও। বরিশাল নগরীর পাড়া-মহল্লার মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। সাভারে মাস্ক না পরেই কোনো কোনো মসজিদে ইমাম ও মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশব্যাপী শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার বরিশাল, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে মুসল্লিরা মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছেন।

রংপুরের অধিকাংশ মসজিদে মুসল্লিদের মাঝে ছিল না সামাজিক দূরত্ব। সবাই গায়ে গা ঘেঁষে দীর্ঘ সময় খুতবা শোনেন। একই অবস্থা গ্রামের মসজিদেও।

বরিশাল নগরীর পাড়া-মহল্লার মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। সাভারে মাস্ক না পরেই কোনো কোনো মসজিদে ইমাম ও মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

নিউজবাংলার ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের বিস্তারিত খবর-

বড় মসজিদে কড়াকড়ি বরিশালে

বরিশাল নগরীর বড় বড় মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও উল্টো চিত্র ছিল পাড়া-মহল্লার মসজিদে। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখেই নগরীর ছোট মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

নগরীর পাড়া-মহল্লার বেশ কয়েকটি মসজিদে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক এবং প্রবেশপথে ছিল না স্যানিটাইজব্যবস্থা।

বিএম কলেজ রোডে তালভিটা জামে মসজিদে গিয়াস উদ্দিন নামে একজন বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আইলে মাস্ক লাগে না। হে পাডাইছে আবার হেই লইয়া যাইবে। করোনা-ফরোনা লইয়া ভাইবা লাভ নাই। মোগো যেন বাঁচাইয়া রাহে এর লইগ্যা দোয়া হরতে আইছি।’

বরিশালের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। ছবি: নিউজবাংলা

রাইসুল ইসলাম নামের এক ব্যাংকার বলেন, ‘মসজিদের সামনে লেখা আছে বিধিনিষেধ, তবে মানানোর জন্য কড়াকড়ি নেই। ব্যবস্থা না থাকায় হাত স্যানিটাইজ করতে পারিনি। এ ছাড়া মসজিদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি চরম উপেক্ষিত। অনেক লোকের সমাগম।’

চকবাজারের জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মানার চিত্র লক্ষ করা গেছে। মুসল্লিরা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে জুমার নামাজ আদায় করেন। একই চিত্র দেখা গেছে নগরীর গির্জা মহল্লার জামে কসাই মসজিদে।

জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের ইমাম মাওলানা নূরুর রহমান বেগ বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনকারী কাউকেই মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ আমরা দিচ্ছি না। কেননা যিনি ওই বিধি ভঙ্গ করবেন, তিনি এই মসজিদের সবাইকে করোনা ঝুঁকিতে ফেলবেন। আমরা বেশ কঠোর রয়েছি মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে।’

বরিশাল মহানগরীর ৩৭০টি মসজিদে জুমার নামাজের খুতবার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউন বাস্তবায়নে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে মহানগর পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা যদি অন্যকে সুরক্ষিত রাখার নিয়তে নিয়মিতভাবে মাস্ক পরি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তবে নিশ্চয়ই এটি একটি পুণ্য হিসেবে গণ্য হবে।’

রংপুরের অধিকাংশ মসজিদে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা হয়নি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি থাকলেও রংপুরের অধিকাংশ মসজিদে জুমার নামাজে ছিল না সামাজিক দূরত্ব। গা ঘেঁষে খুতবা শোনার পর নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। একই চিত্র ছিল গ্রামের মসজিদেও।

নগরের কিছু মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা ছিল। তবে গ্র্যান্ড হোটেল মোড়, ট্রাকস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, শাপলা চত্বর মসজিদ, গনেশপুর জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মসজিদে দেখা গেছে গাদাগাদি করে বসে মুসল্লিরা ইমামের খুতবা শুনছেন।

রংপুরের অধিকাংশ মসজিদে জুমার নামাজে মুসল্লিদের মাঝে ছিল না সামাজিক দূরত্ব। ছবি: নিউজবাংলা

গনেশপুর মসজিদে আসা মোকছেদ আলী জানান, মুসল্লির অনুপাতে মসজিদে জায়গা কম।

মডেল মসজিদে আসা মিলন মিয়া বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে নামাজ পড়তে এসেছি। এখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। কোনো অসুবিধা হয়নি।’

মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) ফারুক আহমেদ বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানাতে আমরা প্রচার চালাচ্ছি। মানুষকে বোঝাতে আমাদের টিম কাজ করছে।’

রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু রায়হান বলেন, ‘প্রতিটি মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছি স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে। মানুষ নিজে সচেতন না হলে এসব মানানো খুব কঠিন হয়ে যায়। তবে জেলা প্রশাসনের টহল টিম ঘোরাঘুরি করছে।’

নজরদারি নেই সাভারের মসজিদে

ঢাকার সাভারের মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। দল বেঁধে মসজিদে প্রবেশ করেছেন মুসল্লিরা। কোথাও কোথাও মাস্ক না পরেই ইমাম ও মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা যায়।

অধিকাংশ মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেখা যায়নি। বাসা থেকে অজু করা বা জায়নামাজ নেয়ার শর্তও মানেননি অনেকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল না বেশির ভাগ মসজিদে।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সাভারে মসজিদের সংখ্যা ৮৮৯টি।

সাভারের অধিকাংশ মসজিদে জুমার নামাজে মুসল্লিদের মাঝে ছিল না সামাজিক দূরত্ব। ছবি: নিউজবাংলা

দক্ষিণ গাজীরচট হক মার্কেট জামে মসজিদের মুসল্লি শিপন আলী বলেন, ‘এই মসজিদের তিনতলা পূর্ণ হওয়ায় বারান্দায়ও নামাজ পড়েছেন মুসল্লিরা। প্রায় ৫০০ মুসল্লি নামাজ পড়ছেন এখানে। মসজিদে কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই।’

একই চিত্র সাভার পৌর এলাকার রেডিও কলোনি সোসাইটি জামে মসজিদেও। দল বেঁধে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেছেন। নামাজ আদায়ের সময়ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা হয়নি। নামাজ শেষে বের হয়েছেন দল বেঁধেই।

আশুলিয়ার নলাম এলাকার ছানদারটেক মসজিদের মুসল্লি আশরাফ হোসেন বলেন, ‘এলাকার এই ছোট মসজিদে ৪০-৫০ মুসল্লি এসেছেন। আমি একাই মাস্ক পরেছি। ইমামসহ আর কেউই মাস্ক পরেননি।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে মাঠপর্যায়ে আমরা মনিটরিং শুরু করেছি। নির্দেশনা অনুযায়ী নামাজে বিধিনিষেধ নেই, তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আমরা সে বিষয়ে মনিটরিং করেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর