টার্গেটে ছিল বয়স্ক অটোরিকশা চালক। হিসাব মিললেই রিজার্ভ নিয়ে গন্তব্যের দিকে যাত্রা। তবে পথমধ্যে চালককে আপ্যায়ন করতে ভুলত না চক্রটি। জুসের সঙ্গে দেয়া হতো নেশাজাতীয় দ্রব্য। এরপর চালক জ্ঞান হারালেই তাকে ফেলে দিয়ে গাড়ী নিয়ে কেটে পড়ত চক্রটি।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের নন্দী গ্রামের ৫২ বছরের অটোরিকশা চালক শাহিনুর ইসলাম বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর গেল ১২ এপ্রিল নিখোঁজ হন। হদিস মিলছিল না তার অটোরিকশার। অবশেষে তার মরদেহ মর্গে পেয়েছিল পরিবার। তাকে হত্যা করেছে ধারণা করে মামলা করে পরিবার। এরপর মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় দুই নারীসহ চারজন।
যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা হলেন কুড়িগ্রামের পাথরডুবি গ্রামের খোরশেদ আলম, নেত্রকোণার হাটশিরা শিবনগর গ্রামের বকুল মিয়া ও একই এলাকার ইয়াসমিন আক্তার। এ ছাড়া ময়মনসিংহের কাদিরপুর গ্রামের শেফালী বেগম।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে শুক্রবার বিকেলে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুরের মনিপুর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ১২ এপ্রিল সকালে প্রতিদিনের মতো অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন শাহিনুর। রাতে বাসায় না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি করে পরিবার। পরে এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন শাহিনুরের স্ত্রী না পারভীন আক্তার ।
এর দুইদিন পর ১৬ এপ্রিল ফেসবুক একজনের পোস্ট দেখে, পরিবার জানতে পারে একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। পরে মর্গে শাহিনুরের মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।
১৯ এপ্রিল ওই সাধারণ ডায়েরি হত্যা মামলা হিসেবে নথিবদ্ধ হয়। মামলার তদন্তের ভার আসে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। দীর্ঘ তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার গাজীপুর হোতাপাড়া থানার মনিপুর বাজার অভিযান চালিয়ে দুইজন পুরুষসহ দুইজন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে অভিযান চালিয়ে দুইটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে৷