বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাজ হারিয়ে দিশেহারা মানুষ

  •    
  • ২ জুলাই, ২০২১ ১৯:২৭

চা-শ্রমিক রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। ছেলেমেয়ে মিলে ছয়জনের সংসার। আমিসহ দুই ছেলেও রোজগার করে। করোনায় ছেলেদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। আমার সামান্য আয় দিয়ে স্বামীর ওষুধ এবং সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেয়া সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পঞ্চগড়ের নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন।

উত্তরের এই জেলায় বিপুলসংখ্যক মানুষ নদী থেকে ও ভূগর্ভস্থ পাথর সংগ্রহ করে জীবন-জীবিকা চালান। এ ছাড়া চা-বাগানের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পাথরভাঙা শিল্পের ওপরে নির্ভরশীল। এ ছাড়া সমতলের চা-বাগানে কাজ করেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা এলাকার চা-শ্রমিক রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। ছেলেমেয়ে মিলে ছয়জনের সংসার। আমিসহ দুই ছেলেও রোজগার করে। করোনায় ছেলেদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। আমার সামান্য আয় দিয়ে স্বামীর ওষুধ এবং সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।’

জেলার হতদরিদ্র মানুষের একটি বড় কর্মক্ষেত্র ছিল তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর।

সেখানে আমদানি করা পাথর ভাঙার কাজ করতেন কয়েক হাজার মানুষ। করোনার কারণে বন্দরে পাথর-বাণিজ্য সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে বড় পরিসরের কাজ হারিয়েছেন এসব মানুষ।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের পাথর আমদানিকারক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে গেছে। তাই সীমিত পরিসরে পাথর আমদানি করতে হচ্ছে। কোয়ারিতে ৪০০ শ্রমিকের জায়গায় এখন ৫০ জন কাজ করছেন।’

তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা বলেন, ‘বাংলাবান্ধা থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নদীপাড়ের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জীবিকা নদীর পাথর সংগ্রহের ওপর নির্ভর করে। করোনার কারণে পরিবহন সমস্যা এবং ব্যবসায়ীদের আর্থিক সমস্যার কারণে পাথর উত্তোলন, কেনাবেচা বর্তমানে সীমিত হয়ে গেছে।’

তেঁতুলিয়া সদরের ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আনিসুর রহমান বলেন, ‘দরিদ্র এই অঞ্চলের মানুষের আয়ের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে মহামারির কারণে। এই অঞ্চলের সমতলের চা-বাগানে কাজ করে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক। মহানন্দা নদীর পাথর উত্তোলন করতে আসে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আরো ১০ হাজার শ্রমিক। এ ছাড়া বন্দরে পাথর ভাঙার কাজ করে নারী-পুরুষ মিলিয়ে কয়েক হাজার শ্রমিক। ভারতীয় সীমান্ত হওয়ার কারণে এই এলাকায় করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সব কর্মক্ষেত্র প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে অভাবী মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।’

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার এই দুর্যোগের সময় জেলার পাঁচটি উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসন অভাবী এবং কর্মহীন মানুষের তালিকা করে প্রত্যককে অর্থ এবং খাদ্যসহায়তা করবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক জেলা প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বতিভাবে এ বিষয়ে কাজ করছে। এ ছাড়া জরুরি খাদ্যসহায়তার জন্য কেউ ৩৩৩ নম্বরে কল করলে দ্রুত খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর