বগুড়ায় করোনা বিশেষায়িত সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এবং শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ও করোনার উপসর্গ নিয়ে ১০ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে এসব করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) শফিক আমিন কাজল হাসপাতালটিতে সাতজন করোনা রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া সেখানে ১০ জন রোগী মুমূর্ষ অবস্থায় ভর্তি আছেন বলেও জানান।
হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকটে অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলেও বেশি রোগী মারা যাওয়ার কথা জানান তিনি।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মাত্র দুটি। অক্সিজেন সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মুমূর্ষু করোনা রোগীদের বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সেই সঙ্গে হাসপাতালে এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি করা আছে। ধারণক্ষমতা ২০০ হলেও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রোগী ভর্তি আছে ২২৩ জন। এর মধ্যে ১০ রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই নিচের দিকে, যাদের হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে।
হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকটের একই চিত্র জেলার অন্য হাসপাতালেও।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার তিন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ২টি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিক আমিন কাজল জানান, তাদের হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ, সেখানে অন্তত ২০টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা প্রয়োজন, বিপরীতে আছে মাত্র দুটি।
এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময় আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা কোনোটাই ছিল না। পরে ৮ শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়।
‘কিন্তু হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র দুটি। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে এখানে। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না।’
সিভিল সার্জন বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ মেলেনি।’