ময়মনসিংহের ভালুকায় সংসদ সদস্যের সই জাল করে নিরাপত্তাকর্মী পদে চাকরি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন সংসদ সদস্য।
মাদ্রাসা সুপারের নাম আবুল কাশেম। তিনি উপজেলার ৭ নম্বর মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের মল্লিকবাড়ী পূর্বপাড়া ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় চাকরি করেন।
একই মাদ্রাসায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি পেয়েছেন মোবারক হোসেন। তিনি মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের আব্দুর রশীদের ছেলে।
অভিযোগ ও এমপিওভুক্তির আবেদন সূত্রে জানা যায়, ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু। তাকে কিছু না জানিয়ে গেল বছরের ১১ নভেম্বর মোবারককে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ওই নিরাপত্তাকর্মীর চাকুরি এমপিওভুক্তির জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন পাঠান মাদ্রাসা সুপার। এসব কাজে সংসদ সদস্যের সই জাল করা হয়।
নিরাপত্তাকর্মী মোবারক হোসেন বলেন, ‘সব নিয়ম মেনেই আমি এই মাদ্রাসায় নিয়োগ পেয়েছি। হঠাৎ কাগজপত্র ঘাটতে গিয়ে দেখি এমপি সাহেব আমার সাক্ষাত নেয়ার সময় যে সই দিয়েছিলেন, সেই সইয়ের সাথে অন্যান্য কাগজে দেয়া সইয়ের কোনো মিল নেই। তখন আমার সন্দেহ হয়। তাই বিষয়টি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য ছোহরাব শেখ ভাইকে জানাই। পরে তিনিই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছোহরাব শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, একজন সংসদ সদস্যের সই জালিয়াতি করা গুরুতর অপরাধ। কাগজে সই দেখে নিজেই হতবাক হয়েছি। ঘটনাটি এমপিকে জানিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, গত ২৪ তারিখে অভিযোগ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত শুরু হয়নি। এই অভিযোগ ছাড়াও এই সুপারের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা করার আরও কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার আবুল কাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রথমে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
পরে তিনি বলেন, এখন যেহেতু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে সেহেতু তদন্ত করলেই সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।
এমপিওভুক্তির কাগজে আপনার সই মিললেও একই কাগজে সংসদ সদস্যের সই না মেলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করলে সব জানতে পারবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ভালুকার সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু বৃহস্পতিবার সকালে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কাগজটি দেখেছি। ওই সই আমার না। অর্থাৎ আমার অজান্তেই মাদ্রাসার সুপার আমার সই জাল করে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’