করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের ওপর চলছে নজরদারি। পুলিশের টহল চলছে বিভিন্ন অলিগলিতেও।
এর আগে বিভিন্ন সময় জারি করা লকডাউনে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এগুলো তেমন দেখা যায়নি। রিকশার সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
ঢাকা থেকে গাজীপুরে প্রবেশমুখে টঙ্গী বাজার এলাকায় বসানো হয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশের চেকপোস্ট। ঢাকামুখী আছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের চেকপোস্ট। সঙ্গে আছেন জেলা প্রশাসকের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মহানগর পুলিশের কর্মকর্তা লুৎফুল কবির জানান, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নগরীর বিভিন্ন প্রবেশপথে ১০টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
শাটডাউনের আওতামুক্ত গাড়ি ছাড়া বাকি সব পরিবহন আটকে দেয়া হচ্ছে। যারা পথচারী তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাদেরও পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বাড়ি।
নগরীর চেরাগআলী, বোর্ডবাজার, সাইনবোর্ড, ভোগরা বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে শাটডাউনের একই চিত্র দেখা যায়।
টঙ্গী বাজার এলাকায় কথা হয় সাউথ এশিয়া সুয়েটার লিমিটেড কারখানার কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আমার প্রতিষ্ঠান। সকাল ৭টায় কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে রিকশায় বিমানবন্দর পর্যন্ত এসেছি ১০০ টাকা ভাড়ায়। এরপর বিমানবন্দর থেকে রিকশায় জসিমউদ্দিন রোড এসেছি ৫০ টাকা ভাড়ায়। সেখান থেকে আরেকটি রিকশায় ৪০ টাকা ভাড়ায় এসেছি আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত।
‘এরপর হেঁটে টঙ্গী ব্রিজ চেকপোস্ট পর্যন্ত এসেছি। গণপরিবহন চালু থাকলে যে ভাড়ায় পৌঁছাতে পারতাম তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দিয়ে এখন যেতে হচ্ছে।’
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গাজীপুরের বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিকদের কারখানায় যেতে হয়েছে হেঁটে বা রিকশায়। নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থায় শ্রমিকদের আনা-নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই তা মানছে না।
টঙ্গীর বিসিক এলাকার বিভিন্ন পোশাক কারখানায় দেখা যায়, কারখানায় ঢোকার সময় শ্রমিকদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। হাতে স্যানিটাইজার মেখে তারপর ভেতরে ঢুকছেন। তবে ছোট কারখানাগুলোতে এই স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা মানতে দেখা যায়নি।
ডেসকোর ভ্যানচালক রবিউল শেখও জানান তার ভোগান্তির কথা। তিনি জানান, মিরপুর থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় মিরপুর ১৩ নম্বর থেকে রিকশায় রওনা হয়ে ১৪ নম্বরে আসেন ৩০ টাকা ভাড়ায়।
সেখান থেকে রিকশায় আরেকজন যাত্রীর সঙ্গে কাকলি পৌঁছান জনপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়ায়। কাকলি থেকে একটি গার্মেন্টসের প্রাইভেট কারে ১০০ টাকা ভাড়ায় আজমপুর। খিলক্ষেত ও এয়ারপোর্টের মাঝামাঝি জায়গায় চেকপোস্টে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে হেঁটে চেকপোস্ট পার হয়ে আবারও রিকশায় আজমপুর।
এতবার ভাড়া দিয়ে যা টাকা ছিল সব প্রায় শেষ। তাই হেঁটেই বাকি পথ যাবেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস এলাহি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত পরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পোশাকশ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে রিকশায় কারখানায় যেতে পারবেন। তবে মাস্ক ছাড়া কাউকে পেলে জরিমানা করা হবে।