সারা দেশে শুরু হয়েছে শাটডাউন। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। জায়গায় জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের ওপর চলছে নজরদারি।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বরাবরের মতোই কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাভারের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এবারও তাদের আনা-নেয়ার জন্য বরাদ্দ নেই কারখানার কোনো পরিবহন।
এ কারণে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারণ যাত্রী না থাকলেও দেখা গেছে পোশাকশ্রমিকদের জটলা। রিকশা, ভ্যান বা লেগুনা দেখলেই তারা গাদাগাদি করে তাতে চড়ে বসছেন।
কিছু কারখানা কর্মীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে। এমন বাস কোথাও থামলে তাতে অন্য কারখানার শ্রমিকরাও উঠে পড়ছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে কর্মস্থলে যেতে। জানেন না ফেরার সময় কী হবে।
অনেককেই দীর্ঘ সময় পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করে হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে।
বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকায় পরিবহনের জন্য অপেক্ষায় থাকা পোশাকশ্রমিক ইতি খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় কি যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ি আছে? এটা কি লকডাউনের পরিস্থিতি? এইডা কিসের লকডাউন। এইডা হইল আমাগো সাধারণ মানুষরে শাস্তি দেওন কয়।’
আরেক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মনে করেন ১০ টাকার ভাড়া, ৫০ টাকা দিয়া আসলাম। রিকশাওয়ালা, অটোয়ালারা ভাড়া বেশি চাইয়া হাসতাছে। এটা কি মজার বিষয় না? সরকার তো আমাদের সুবিধার দিকে চাইল না… আমাদের গার্মেন্ট শ্রমিকদের কোনো নিরাপত্তা নাই… এ রকম হলে ফ্যাক্টরিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিক।’
শ্রমিকদের ভোগান্তির বিষয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোনো সদিচ্ছা এই লকডাউনে নেই। কারণ, যেখানে ৫০ লাখ মানুষ, তারা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সেখানে তাদের ঝুঁকিতে রেখে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
‘এই লকডাউনে সবকিছু বন্ধ রাখা হলেও গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। মালিকদের পরিবহনের ব্যবস্থা করার কথা বলা হলেও তারা বলছে, শ্রমিকরা না কি এক-দুই কিলোমিটারের ভেতরে থাকে। এই পথও কিন্তু শ্রমিক ৫-১০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাসেই কারখানায় যায়। সেই পরিবহন না থাকার কারণে আজ কিন্তু শ্রমিকরা বৃষ্টির মধ্যেই হেঁটে কারখানায় যাচ্ছে।’
শ্রমিকদের দুর্ভোগের দিকে নজর দিতে সরকার ও কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান এই শ্রমিকনেতা।