মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বুধবার রাতে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছে। রাত ১০টার দিকে নগরের নিচু এলাকায় ফের হাঁটুপানি জমে। এতে অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
বৃষ্টিতে নগরের মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ২ নম্বর গেট, বাকলিয়া, কাপাসগোলা, কোতোয়ালী, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমেছে।
হাঁটু পানি মাড়িয়ে রাত ১১টার দিকে নাসিরাবাদ থেকে টেক্সাইল এলাকায় বাসা ফেরেন সংবাদকর্মী মিজানুর রহমান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাতার মারি বাসাত ডুকিলাম মাত্র। পেন্ট পুরা ভিজি গেইয়ি। হনরহম বাসাত আইলাম। (সাতার কেঁটে কেঁটে বাসায় ঢুকলাম মাত্র, প্যান্ট পুরো ভিজে গেছে। কোনোরকম বাসায় আসলাম।)
এর আগে বুধবার সকালের বৃষ্টিতে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, আগ্রাবাদ কে-ব্লক, কাপাসগোলা, বাকলিয়া, কোতোয়ালী এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। হালিশহর, কোতোয়ালী এলাকায় সবচেয়ে বেশি পানি উঠে। তখন পানি সরাতে সেনাবাহিনীর দুইটি টিম মাঠে নামে।
এদিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার দুপুর ১২টার আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আজাদ হোসেন বলেছেন, ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি পড়লেই চান্দগাঁও আবাসিকে পানি উঠে। সেই ধারাবাহিকতায় আবাসিকের ভেতরে জমে গেছে। পানির কারণে সড়কে বের হতে পারছি না।
কোতোয়ালীর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে আমার ওয়ার্ডের এয়াকুব নগর, বংশাল রোড, আর সি চার্চ রোড, ডা. মান্নান গলিসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে গেছে।
২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি খাল থেকে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রমও শুরু হয়।
ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে নগরে ৩৬টি খাল খনন, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।
সিডিএর প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দীন বলেন, প্রকল্পের অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় এখন চট্টগ্রামে পানি কম উঠছে। প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন হবে।