বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২৩ বছরে পাঁচবার ধস শতবর্ষ স্থায়িত্বের বাঁধে

  •    
  • ৩০ জুন, ২০২১ ০১:৫৭

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাঁধের পুরাতন জেলখানা ঘাট এলাকায় পঞ্চম ধস শুরু হয়। দেড় ঘণ্টার মধ্যেই বাঁধের ১৫০ মিটারে ভাঙন দেখা দেয়। ফাটল দেখা দিয়েছে আরও ৪০০ মিটারে। ভাঙন বাঁধের টি পয়েন্টের সংযোগ রক্ষাকারী পাকা সড়কে এসে ঠেকেছে।

সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটি নির্মাণের সময় স্থায়ীত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। ১৯৯৭ সালে নির্মাণের পর গত ২৩ বছরেই পাঁচবার ধস নেমেছে এ বাঁধে।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাঁধের পুরাতন জেলখানা ঘাট এলাকায় পঞ্চম ধস শুরু হয়। দেড় ঘণ্টার মধ্যেই বাঁধের ১৫০ মিটারে ভাঙন দেখা দেয়। ফাটল দেখা দিয়েছে আরও ৪০০ মিটারে। ভাঙন বাঁধের টি পয়েন্টের সংযোগ রক্ষাকারী পাকা সড়কে এসে ঠেকেছে।

ভাঙনের খবরে আতংকিত হয়ে পড়েছে শহরবাসী। তবে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভয়ের কিছু নেই। বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

যমুনার ভাঙন থেকে সিরাজগঞ্জ শহরকে রক্ষায় বঙ্গবন্ধু সেতু প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সালে আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হুন্দাই লিমিটেড এ বাঁধ নির্মাণ করে। ওই সময় বাঁধটির স্থায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর।

বাঁধটি নির্মাণের পর ১৯৯৭ সালে দায়িত্ব বুঝে নেয় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। একশ বছরের স্থায়িত্ব রক্ষায় সে সময় নিয়মিত পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নানা পরামর্শ দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে বাঁধটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব নেয়ার ১২ বছর পর ২০০৯ সালের ১০ জুলাই প্রথম এই বাঁধে ধস নামে। একই বছরের ১৭ জুলাই নামে দ্বিতীয় ধস। ২০১০ সালের ১৬ জুলাই তৃতীয়, ২০১১ সালের ১৮ জুলাই চতুর্থ এবং সবশেষ মঙ্গলবার পঞ্চমবারের শহর রক্ষা বাঁধটিতে ধস নামল।

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় শহরবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের ধানবান্ধির বাসিন্দা মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১০০ বছরের স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে নির্মিত বাঁধটির কাজ শেষ হলে শহরবাসীর মধ্যে স্বস্তি নেমেছিল।

‘বাঁধটি নির্মাণের পর গত ২০ বছরে সিরাজগঞ্জ শহরজুড়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য বহুতল ভবন। কিন্তু বার বার বাঁধে ধস নামায় শহরবাসী আর আশ্বস্ত হতে পারছে না।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বাচ্চু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর আগে বেশ কয়েকজন গবেষক এসে বলে গেছেন, যমুনা নদীর তলাদেশে কারেন্ট (তরঙ্গ) রয়েছে। যে কোনো সময় এই বাঁধ ধসে যাবে।

‘তাই শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ মেরামত আর বর্ষার শুরু থেকেই প্রতিনিয়ত তদারকি করলে ভাঙনের সংখ্যা কম হবে। কিন্তু সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিক মতো তদারকি না করার কারণেই আজ এই ভাঙন দেখা দিয়েছে।’

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, ‘ভয়ের কিছু নেই আমরা ভাঙনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। কোনোভাবেই এই বাঁধকে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোডের্র নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, টানা বৃষ্টি ও নদীর পানির তীব্র স্রোতে ঘূর্ণাবতের সৃষ্টি হয়ে বাঁধের নিচ থেকে মাটি সরে সিসি ব্লকগুলো দেবে গেছে।

তিনি বলেন, ‘দুই দিন আগেও আমরা এখানে ভালো অবস্থা দেখেছি। মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে এ ধস দেখা দিয়েছে। ধস ঠেকাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু হয়েছে।

‘শহরবাসীর কোনো ভয় নেই, এই স্বল্প ভাঙনে কিছুই হবে না।’

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফারুক আহম্মেদ নিউজবাংলাকে জানান, শত বছরের স্থায়িত্বের বাঁধটিতে কেন বার বার ভাঙন দেখা দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয়ে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, ‘এখন বেশি জরুরি বাঁধটি রক্ষা করা। যেভাবে কাজ চলছে তাতে আর ভাঙন হবে না। তাই শহরবাসীকে বলি, আপনারা আতংকিত হবেন না।’

এ বিভাগের আরো খবর