মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবন নির্মাণের তিন বছরের মাথায় ১০০ ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কায় আতঙ্কে আছেন ডাক্তার, নার্সসহ রোগীরা।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে কমপ্লেক্সের তিন তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ২ মে।
নির্মাণ কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। নির্মিত কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
৮ কোটি ৩২ লাখ ৬ হাজার ৭০১ টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করেছিল ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ এন্ড এসসি। পাশাপাশি ৮০ লাখ টাকায় পুরাতন ভবন সংস্কারের কাজও করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, উদ্বোধনের তিন বছরের মাথায় ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার পিলার, বিমসহ দেয়ালে অন্তত ১০০ ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ডাক্তার, নার্সসহ রোগীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনে যে সংস্কার কাজ করা হয়েছিল, তাও প্রায় খসে পড়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কক্ষ, জরুরি বিভাগ এবং রোগীদের ওয়ার্ডের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়েছে।
খসে পড়েছে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ভবনের ছাদের প্লাস্টার
সিলেট বিভাগ উচ্চ ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়ায় যেকোন সময় ভবন ধসে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছে সচেতন মহল।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়ে জেনেছি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ফাটল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফাটল দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল গেটের পিলারেও
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। তবে চলতি জুন মাসে ব্যস্ত আছেন, পরে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন।ভবন উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী) শফিকুর রহমান জানান, নতুন ভবনের কাজটি যখন শুরু হয়, তখন তিনি ছিলেন না। উদ্বোধনের দুই মাস আগে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিম ও কলাম ফাটার কথা নয়। তবে মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তদন্ত করলে ফাটলের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।