চট্টগ্রামের একটি খামার থেকে ২০১৬ সালে ৩৫ হাজার টাকায় বাছুর কেনেন হামিদা বেগম। একে তিনি নিয়ে যান নগরীর বায়েজিদ থানার কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকায়। বাছুরটির নাম দেন বিজয়।
হামিদার কুঞ্জছায়ার বাসায় পাঁচ বছরের বেশি সময় কাটে বিজয়ের। সেখানে থেকে ছোট্ট বাছুরটি এখন ছোটোখাটো হাতির সমান হয়েছে।
এই কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করবেন হামিদা। তার দাম ২৫ লাখ টাকা হাঁকছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে ২১ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম নগরীতে এখন বেশ আলোচনায় এই গরু। কিন্তু কেন?
সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল বিজয়কে দেখেই। কালো ও বাদামি রঙের গরুটি লম্বায় প্রায় ১০ থেকে ১১ ফুট। এর উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট।
বিজয়ের মালিক হামিদার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে চট্টগ্রামের একটি ডেইরি ফার্ম থেকে একটি বাছুর কিনেছিলাম। পাঁচ বছর এর পেছনে শ্রম দেয়ার পর এটি আজকের এই বিজয়ে পরিণত হয়েছে।
‘প্রতিদিন বিজয়ের পেছনে আমাদের ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। প্রতি মাসে বিজয়ের জন্য আলাদা ভাড়া করা ঘর, বিদ্যুৎ ও পানি বাবদ ৬ হাজার টাকা খরচ হয়। বিজয়কে কেনা থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে।’
কোরবানির জন্য দাম কত হাঁকা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫ লাখ টাকা দাম চাইতেছি এখন। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২১ লাখ টাকা বলেছেন কয়েকজন। আমরা দিইনি।’
হামিদার স্বামী আজিজুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ছোলা, দুই ধরনের মটর, ডাবের পানি, খইল, আটার গুঁড়ো মিক্স করে খাবার দিতে হয়। তবে মাঝে মাঝে সবজি, কলা, আপেল এসবও খাওয়ানো হয় বিজয়কে।’
তিনি জানান, ২০১৯ সালে বিজয়ের ওজন দেখা হয়েছিল প্রথমবার। তখন ওজন ছিল সাড়ে ২৬ মণ। এখন ৩৫ থেকে ৪০ মণ হবে বলে তার ধারণা।
বিজয়কে লালন-পালন করতে গিয়ে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছে বলে জানান হামিদা।
তিনি বলেন, ‘বিজয়কে রাখতে গিয়ে কিছুটা ঝামেলায় পড়েছিলাম শুরুতে। তাকে রাখার মতো ভালো কোনো ঘর পাচ্ছিলাম না। তাই বাসা থেকে ১৪ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে সিটি গেইট এলাকায় একটা ঘরে রাখতাম। কিন্তু বেশি দূরে হয়ে যাওয়ায় ফয়’স লেক এলাকায় আরেকটা ঘরে রাখি।
‘এটাও বাসা থেকে প্রায় ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে। তবে তিন বছর আগে বাসার কাছেই বিজয়কে রাখার মতো যথাযথ একটি ঘর পেয়েছি। প্রতি মাসে সেই ঘর ভাড়া বাবদ ৬ হাজার টাকা দিতে হয়।’
হামিদা ও তার স্বামী জানান, বিজয়কে ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে সেই টাকায় একটি খামার গড়ার পরিকল্পনা আছে তাদের।