চাঁদপুর শহরে আছমা বেগম নামের এক গৃহবধূকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী তাজু গাজীর বিরুদ্ধে।
সোমাবার সকালে শহরের পুরানবাজার মধ্য শ্রীরামদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আছমার স্বজনদের দাবি, আছমাকে জোর করে বিষ খাইয়েছেন তার স্বামী তাজু গাজী। সকালে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যার পর থেকে তাজু গাজী পলাতক আছেন।
এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আছমার ভাই রাজু মিজি বলেন, ‘২০ বছর আগে শহরের পুরানবাজার মধ্য শ্রীরামদী এলাকার তাজু গাজীর সঙ্গে আছমার বিয়ে হয়। তাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তাজু দুই-তিন বছর আগে আছমার অনুমতি না নিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন। এ নিয়ে শুরু হয় অশান্তি। বোনকে বেশ কয়েকবার মারধর করেন তাজু। তখন তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘তাদের নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হয়েছিল। তখন সিদ্ধান্ত হয়, দ্বিতীয় স্ত্রীকে তিনি ছেড়ে দেবেন। পরে আছমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। কিছুদিন পর আবার সেই নারীকে নিয়ে শহরের নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।
‘দুইদিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তিনি বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ নিয়ে ঝগড়া করে তার বড় ছেলে তুষার ও ছোট ছেলে টিপুকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। সকালে খবর পাই, আছমা অসুস্থ্য। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
আছমার ছেলে টিপু জানান, ‘আমার বাবা আরেকটা বিয়ে করার পর থেকেই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয়। দুই দিন আগে ঝগড়া করে বড় ভাই ও আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন বাবাা। মাকে আমার বাবাই মেরে ফেলেছেন। আমরা বিচার চাই।’
মেয়ে তামান্না জানান, ‘রোববার রাতে আব্বা মার সঙ্গে ঝগড়া করেন। আমরা ভয়ে কেউ কাছে যাই নাই।’
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, ‘রোগীকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি, বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এ মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। পরে সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।