সালিশ বৈঠকে ডেকে নিয়ে বাল্যবিবাহ করে আলোচনায় আসা পটুয়াখালীর বাউফলের ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে এবার জেলা আদালতে মামলা হয়েছে।
বাল্যবিবাহের শিকার কিশোরীর প্রেমিকের ভাই সোমবার দুপুরে পটুয়াখালী জুডিশিয়াল আমলি আদালতে মামলাটি করেন। পরে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
এজাহারে বলা হয়, বাদীর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে একই গ্রাম কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপাশার এক কিশোরীর দুই-তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। মেয়েটির বয়স ১৮ না হওয়ায় তারা বিয়ে করতে পারেনি।
প্রেমের বিষয়টি জানার পর দুই পরিবার না মানায় গত বৃহস্পতিবার তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটির বাবা দুজনকে পাশের বাড়ির এক আত্মীয়র কাছ থেকে ধরে নিয়ে আসেন এবং বিষয়টি সমাধানের জন্য কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে জানান।
শুক্রবার ছেলে-মেয়ে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজের আয়লা এলাকার বাড়িতে সালিশে বসেন চেয়ারম্যান। সেখানে তার ভাইকে গালিগালাজ ও মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়।
একপর্যায়ে কিশোরীকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যান চেয়ারম্যান শাহীন। পরে লোকমুখে জানতে পারেন, চেয়ারম্যান তার ভাইয়ের প্রেমিকাকে পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে ওই দিনই বিয়ে করেন।
বাদী বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আমাদের বারবার হুমকি দেয়া হচ্ছে এলাকাছাড়া করার জন্য।’
এদিকে ওই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে পরদিন সন্ধ্যায় কিশোরীর কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন চেয়ারম্যান।
আলোচিত এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে রোববার হাইকোর্টে একটি পিটিশন করেছেন আইনজীবীরা। পরে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালী পিবিআই এবং জেলা রেজিস্ট্রারকে এ ঘটনার তদন্ত করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো আদেশ তার হাতে এসে পৌঁছায়নি। আদেশ হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবেন।