কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় গত তিন দিন ধরে দুটি বন্য হাতিকে ঘুরতে দেখা গেছে।
গত শনিবার দুপুরে দুটি বন্য হাতিকে প্রথম নাফ নদীর প্যারাবন এলাকায় ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। সন্ধ্যায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় প্রাণী দুটিকে উদ্ধার করে নাইট্যংপাড়া বনাঞ্চলে ছেড়ে দেন বন বিভাগের এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের প্যারাবন এলাকায় আবার দুটি হাতি দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। রাত আটটা পর্যন্ত সেখানেই ছিল। সোমবার দুপুরের দিকে নাফ নদী সাঁতরে শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট চত্বরে অবস্থান নেয় হাতি দুটি।
স্থানীয়দের ধারণা, শনিবার সন্ধ্যায় টেকনাফের জালিপাড়াসংলগ্ন নাফ নদীর কেওড়া বাগান এলাকা থেকে যে দুটি হাতিকে পাহাড়ে ফেরানো হয়েছিল, সেই হাতিগুলোই শাহপরীর দ্বীপের লোকালয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে।
স্থানীয়দের ধারণা, খাবারের খোঁজে মিয়ানমার সীমান্তে এসে ভারী বৃষ্টিতে হাতি দুটি পানিতে ভেসে চলে আসতে পারে।
নাফ নদী পেরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট চত্বরে অবস্থান নেয় দুটি বন্য হাতি। ছবি: নিউজবাংলা
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমেদ জানান, শনিবার জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়স্ক দুটি হাতি উদ্ধার করে টেকনাফের নাইট্যংপাড়া বনাঞ্চলে ছেড়ে দেয়া হয়। হাতি দুটির মধ্যে বড়টির উচ্চতা ৯ ফুট ও ছোটটির উচ্চতা ৭ ফুটের মতো।
তিনি আরও জানান, তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না হাতি দুটি মিয়ানমার থেকে এসেছে কি না। তবে গত বছরের আগস্টে মিয়ানমার থেকে সাঁতরে একটি হাতি এসেছিল।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে লোকালয়ের পাশে হাতি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাদের খবর দেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) যে হাতিগুলোর দেখা মিলেছে, সেগুলো পাহাড়ে ফেরানো হাতি কি না, তা আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। হাতিগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
স্থানীয় মনজুর আলম নিউজবাংলাকে জানান, দীর্ঘ সময় পানিতে থাকায় হাতিগুলো ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। খাদ্যের খোঁজে এগুলো শাহপরীর দ্বীপের জেটিঘাট চত্বরে অবস্থান করছে। এখনই হাতি দুটিকে উদ্ধার করা না গেলে সেগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কক্সবাজার জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, দীর্ঘক্ষণ পানিতে অবস্থান করার কারণে হাতিগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দ্রুত প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা প্রয়োজন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ জানান, হাতিগুলো উদ্ধারে বন বিভাগকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তারা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।