বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গরুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় ফেনীর খামারিরা

  •    
  • ২৭ জুন, ২০২১ ০৮:৫৪

ফেনীর খামারিদের কোরবানি ঈদ সামনে রেখে ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে ঈদের জন্য। তবে দুশ্চিন্তা ভারতীয় গরু। ঈদ সামনে রেখে ভারতীয় গরু অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিদিনই আসছে।

করোনা মহামারির মধ্যেই আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিস্থিতির কারণেই এবার পশুর হাট নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দুশ্চিন্তা রয়েছে।

তাদের মূল শঙ্কা, চোরাইপথে আসা ভারতীয় গরু।

চলতি বছর ফেনীতে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৭২ হাজার। অপরদিকে এ জেলায় লালনপালন করা হচ্ছে ৮০ হাজার ৮৬৫টি গবাদিপশু।

এই পরিস্থিতির মধ্যে ভারত থেকে গরু এলে দেশীয় খামারিরা উপযুক্ত মূল্য পাবেন না।

প্রতিবছর কোরবানি ঈদ এলে শহর-নগর, গ্রাম, পাড়া-মহল্লার সব জায়গায় বসে পশুরহাট। কিন্তু করোনার এই মহামারিতে পশু ক্রয়-বিক্রয় কীভাবে হবে এ নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে খামারি ও ক্রেতা—দুই পক্ষের মধ্যেই।

খামারিদের শঙ্কা, করোনার কারণে এ বছর তাদের লোকসান গুনতে হবে। এর মধ্যে চোরাইপথে ভারতীয় গরু এলে তাদের লোকসান আরও বাড়বে।

তাদের অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্তপথ দিয়ে পশু ঢুকছে প্রতিনিয়ত।

ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় ৭২ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে ৮০ হাজার ৮৬৫টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফলে ফেনীতে এবার কোরবানির পশুসংকট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

এ ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে এক বা একাধিক কোরবানির পশু লালনপালন করছেন। এর সংখ্যাও ২০ হাজারের বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যমতে, ফেনী সদর উপজেলায় ২১ হাজার ৩২২, দাগনভূঞায় ৮ হাজার ৮৩০, ছাগলনাইয়ায় ১৮ হাজার ৭২৫, সোনাগাজীতে ১৭ হাজার ৫০৫, ফুলগাজীতে ৫ হাজার ২০৬ এবং পরশুরামে ৮ হাজার ২২৭টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল একজন সফল খামারি। তিনি চৌধুরী অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক।

তিনি বলেন, এ বছর ওজন করে পশু বিক্রি করারও প্রস্তুতি আছে। গত ২০ বছরের চিত্র আর চলতি বছরের চিত্রে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস।

‘এ বছর মার্চ মাস থেকে করোনায় দেশের সব কটি গরুর বাজার বন্ধ ছিল। এ জন্য আমরা খামারিরা গরু কিনতে পারিনি। প্রত্যেক বছর আমি ৫০০ থেকে ৬০০ গরু কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করি। কিন্তু এ বছর আমি ৩০০ গরুর বেশি নিতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই বছর কোরবানি পশুর বাজার কোন পরিসরে হবে, আমরা এখনো নির্দেশনা পাইনি।’

তিন দিকে সীমান্তবেষ্টিত পরশুরাম উপজেলা। প্রতিবছরই কোরবানি ঈদ সামনে রেখে চোরাইপথে প্রচুর গরু বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এতে দাম কমে গিয়ে বাংলাদেশের ছোট-বড় গরু খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ভারতীয় গরুর প্রবেশ প্রসঙ্গে সাজেল চৌধুরী বলেন, পরশুরামের বক্স মাহমুদের খাজুরিয়া ও মির্জানগর সীমান্ত দিয়ে প্রতি রাতে ৬০০ থেকে ৭০০ গরু নামে। এভাবে যদি গরু ঢোকে, তাহলে দেশি খামারিদের সব কষ্ট, শ্রম ও পুঁজি বৃথা যাবে।

নজরুল ইসলাম নামে এক নবীন খামারি বলেন, ‘কোরবানির জন্য ৩০টি গরু প্রস্তুত করছি। প্রতিটি গরু ১ লাখ বা তারও বেশি টাকায় বিক্রি করা যাবে। করোনায় কর্মসংস্থান হারিয়ে অনেকে যুবক গবাদিপশু লালনপালনে মনোনিবেশ করেছেন। এখন ভারত থেকে গরু এলে এই চেষ্টাতে মার খেতে হবে।’

সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি)। ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুর রহিম জানান, ‘কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে সীমান্তে গরু চোরাচালান রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবির সদস্যরা, বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।’

কোরবানির পশু লালনপালনে নিয়মিত খামারিদের সহযোগিতা করছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। ফেনী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হক জানান, ‘কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে নিয়মিত খামার পরিদর্শন, খামারিদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও যাবতীয় সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।’

‘এ ছাড়া বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে ৪-৫ মাসের মধ্যে কোরবানির পশু মোটাতাজা করার বিষয়ে খামারি ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’

ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, অবৈধপথে ভারতীয় পশু আসা বন্ধ করার জন্য বিজিবি ও পুলিশকে টহল বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর