বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রিফাতের বাবা উদ্ভ্রান্ত, এখনও কাঁদেন মা

  •    
  • ২৬ জুন, ২০২১ ১৫:০৯

রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরিফ বলেন, ‘আমি বাড়ির বাইরে বাইরে সারা দিন ঘুরি। এ জন্য ছেলে হারানোর কষ্ট কিছুটা ভুলে থাকার সুযোগ পাই। কিন্তু আমার স্ত্রী আর মেয়ে তো বাড়িতে থাকে। তারা রিফাতের শূন্যতা ভুলবে কীভাবে?’

বরগুনায় আলোচিত রিফাত হত্যার দ্বিতীয় বার্ষিকী চলে এলেও এখনও মামলার রায় কার্যকর হয়নি।

পরিবারের দাবি, আদালত খোলার পর দ্রুত যেন কার্যকর করা হয় রায়।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহ্ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে নয়ন বন্ড বাহিনী। ওই দিন বিকেলে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাতের মৃত্যু হয়।

হত্যার দুই বছর পরও রিফাতের শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি তার পরিবার।

রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরিফ নিউজবাংলাকে জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সুখের সংসার ছিল। মিন্নির কারণে সেই সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বাড়ির বাইরে বাইরে সারা দিন ঘুরি। এ জন্য ছেলে হারানোর কষ্ট কিছুটা ভুলে থাকার সুযোগ পাই। কিন্তু আমার স্ত্রী আর মেয়ে তো বাড়িতে থাকে। তারা রিফাতের শূন্যতা ভুলবে কীভাবে?

‘রিফাতের শোকে আমার স্ত্রী নানা রকম রোগে এখন শয্যাশায়ী। ছেলে হত্যার বিচার পেলে হয়তো আমরা কিছুটা সান্ত্বনা পাব।’

রিফাতের মা ডেইজি আক্তার বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে (রিফাত) ছাড়া থাকতে পারি না। আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব এই মামলার রায় বাস্তবায়ন করা হোক।’

এরপর কান্নায় আর কিছু বলতে পারেন না ডেইজি আক্তার।

রিফাত হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রমের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘করোনার কারণে সব মামলার বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। পেপারবুক প্রস্তুত হলেই আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত শুনানি হয়, সে বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নেব।’

দুই বছর আগে রিফাতকে কুপিয়ে জখমের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা রকম আলোচনা। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে।

ঘটনার পরদিন বরগুনা সদর থানায় ১২ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন রিফাতের বাবা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে রিফাতকে কুপিয়ে জখমের ভিডিও

তবে হত্যার ছয় দিন পরই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বাহিনীর প্রধান সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

এ মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে ঘটনার ২০ দিন পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দিকে মোড় নেয়ায় এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ১ অক্টোবর বিকেলে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক- এই দুই ক্যাটাগরিতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।

আদালত ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিচারের জন্য মামলাটি শিশু আদালতে পাঠায়।

২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বিচারকাজ শুরু হয়। তবে দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই বছরের ৮ মার্চ থেকে ছয় মাসের জন্য এ মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

পরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় দেয় আদালত। রায়ে মিন্নিকে হত্যাকাণ্ডের প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মিন্নিসহ ছয় আসামিকে দেয়া হয় মৃত্যুদণ্ড। মিন্নি বাদে বাকিরা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান।

বিচারিক আদালতে ফাঁসির রায়ের পর মিন্নিকে কারাগারে নেয়া হয়।

বাকি চার আসামিকে খালাস দেয়া হয়।

মিন্নি আছেন কাশিমপুর কারাগারে আর বাকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা বরগুনা জেলা কারাগারে।

এরপর ২৭ অক্টোবর বরগুনার শিশু আদালত অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয় আসামিকে ১০ বছরের, চারজনকে ৫ বছরের ও একজনকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। বাকি তিনজনকে খালাস দেয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর দণ্ডিতরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তবে করোনার কারণে বন্ধ আছে এই মামলার বিচারকাজ।

এ বিভাগের আরো খবর